প্রশান্ত মহাসাগরের ছোট্ট দ্বীপদেশ সামোয়ায় মাসখানেকের রাজনৈতিক নাটকীয়তার পর প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ফিমে নাওমি মাতা’আফার শপথ ঘিরে সষ্টি হয়েছে আরেক নাটকীয়তা।
Published : 24 May 2021, 07:29 PM
নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী ও তার দলবল নাওমিকে শপথ নিতে বাধা দেওয়ার জন্য পার্লামেন্ট ভবনে তালা দিয়েছে। ফলে বাইরের একটি তাঁবুতেই শপথ নিতে বাধ্য হয়েছেন নাওমি।
তবে নাওমি এভাবে শপথ নিলেও সামোয়ার শাসনভার কার হাতে থাকবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হল বলে জানিয়েছে বিবিসি।
২২ বছর ধরে দেশটি শাসন করে এসেছেন তুলেইপা সাইলেলে মালিয়েলেওই। দীর্ঘসময় ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রীদের তালিকায় বিশ্বে মালিয়েলেওই-এর অবস্থান দ্বিতীয়।
গত এপ্রিলে সামোয়ার নির্বাচনে মালিলেওইকে হারিয়েছেন বিরোধীদল ‘ফাস্ট’ পার্টির নেত্রী নাওমি। কিন্তু এই পরাজয় মেনে নেননি মালিলেওই।
নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর পুনর্নির্বাচন হওয়া নিয়ে একমাসের সঙ্কটের অবসান ঘটিয়ে সামোয়ার সুপ্রিম কোর্ট কয়েকদিন আগে ফিমে নাওমি মাতা’আফার জয়ের পক্ষে রায় দেওয়ার পরও মালিলেওই কোর্টের পদত্যাগের আদেশ উপেক্ষা করেছেন।
বিবিসি জানায়, সোমবার পার্লামেন্টে শপথ নেওয়ার কথা ছিল নাওমির। কিন্তু তিনি প্রধান বিচারপতিকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে পৌঁছানোর আগেই মালিলেওই ও তার অনুগতরা ভবনের গেট তালাবদ্ধ করে দেন।
দলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সব সময় গণতন্ত্রের বিজয় হবেই। এই মৌলিক নীতির কোনও ব্যত্যায় ঘটতে পারে না। যারা এর অন্যথা দাবি করে এবং সে অনুযায়ী কাজ করে তারা আসলে আগুন নিয়ে খেলে।”
নাওমির এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানকে ‘অবৈধ এবং বেআইনি’ বলে অভিহিত করেছেন তুলেইপা সাইলেলে মালিয়েলেওই। অনুষ্ঠানটি অনানুষ্ঠানিক বলেই বর্ণনা করেছে প্রতিপক্ষরা।
মাত্র ২ লাখ মানুষের দেশ সামোয়ায় গত চার দশক ধরে নির্বাচনে জিতে এসেছে মূলত একটি রাজনৈতিক দল ‘হিউম্যান রাইটস প্রটেকশন পার্টি’ (এইচআরপিপি)। তাই এবার নতুন প্রধানমন্ত্রী নাওমির আগমনকে গণতন্ত্রের নতুন যুগের শুরু হিসেবেই দেখছেন পর্যবেক্ষকরা।
সামোয়ায় দীর্ঘ কয়েক দশকের রাজনৈতিক ধারায় ভাঙন ধরেছিল গতবছরই, যখন এইচআরপিপি’র সদস্যরা দল থেকে বেরিয়ে গিয়ে নিজস্বভাবে গড়ে তোলে বিরোধীদল দল ‘ফাস্ট’ (ফাতুয়াতুয়া ই লে আতুয়া সামোয়া উয়া তাসি)। এরপর জানুয়ারিতে ফিমে নাওমি মাতা’আফা সেই দলে যোগ দেওয়ার পর দ্রুতই সম্মুখসারিতে চলে আসেন।
১৯৮০’র দশক থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় নাওমি এর আগে উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও, তিনি দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে। তবে শুধুমাত্র উত্তরাধিকারের জায়গা থেকেই নয়, বরং মানুষের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রেও তার সুনাম দীর্ঘদিনের।