বিবিসি জানায়, ভোটের মাত্র ৫ দিন আগে বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডার ট্যাম্পায় একই দিনে নির্বাচনী সমাবেশ করেছেন দুই প্রার্থী। একে অপরকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছেন তারা।
বাইডেন তার সমর্থকদের বলেছেন, “আপনাদের হাতেই ক্ষমতা। ফ্লোরিডা নীলের (ডেমোক্র্যাট) পক্ষে গেলেই হল।”
অন্যদিকে, অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরে রিপাবলিকান ট্রাম্প বলেছেন, “তিনি (বাইডেন) জিতলে আপনাদের লকডাউন করে রাখবেন।”
নির্বাচনের আসন্ন মুহূর্তে এসেও জাতীয় জনমত জরিপগুলোতে ট্রাম্পের চেয়ে বাইডেনকেই এগিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
তবে ফ্লোরিডার মতো ব্যাটেলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্যে জরিপে বাইডেনের এগিয়ে থাকার এই সুবিধা যে কাজে আসবে তা নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এমন অঙ্গরাজ্যগুলোতে জয় পেলে মূলত হোয়াইট হাউস জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
এরই মধ্যে দেশটির আট কোটির বেশি ভোটার আগাম ভোট দিয়ে দিয়েছেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে যে পরিমাণ আগাম ভোট পড়েছিল, এবার তার থেকে ৫৮ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। মানুষ ডাকযোগে এবং আগাম ভোটকেন্দ্রগুলোতে গিয়ে ভোট দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডার ট্যাম্পার সমাবেশে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির নতুন অগ্রগতির চিত্র দিয়ে বলেছেন, সর্বসাম্প্রতিক প্রান্তিকে অর্থনীতির প্রসার ঘটেছে বার্ষিক ৩৩% হারে। যা গত তিন মাসের চেয়ে বেশি।
হোয়াইট হাউস ধরে রাখতে ফ্লোরিডাতে জয় পেতেই হবে ট্রাম্পকে। কিন্তু জনমত জরিপগুলোতে বাইডেনের চেয়ে ১.৪ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছেন তিনি।
১০০ মিনিটের সমাবেশে সমবেতদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, জো বাইডেনের পরিকল্পনা হল (করোনাভাইরাস) লকডাউন দিয়ে শাস্তি দেওয়া। তিনি আপনাদের লকডাউন করে রাখবেন।=
ইউরোপীয়দের প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্প বলেন, “সেখানে সংক্রমণ বাড়ছে, তারা অনেক কিছুই বন্ধ করছে, তারা লকডাউন জারি করছে। আমি এর সঙ্গে একমত নই। আমি আপনাদের আর কখনও লকডাউন করব না। আমরা লকডাউন দিয়েছিলাম, রোগটি সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য চালু করেছি।”
ট্রাম্পের প্রচারে গতি আনতে তার পাশে দাঁড়ান ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারের শেষ মুহূর্তে স্বশরীরের মেলানিয়া অংশ নিয়ে বলেন, “আমরা আশাবাদী দেশ, ভীত বা দুর্বল নই। আমরা এমন এক নেতা পেয়েছি, যিনি প্রতিই দিনই তা আপনাদের দেখিয়ে দিচ্ছেন।”
অন্যদিকে, ফ্লোরিডায় মিয়ামির উত্তরে ব্রোওয়ার্ড কাউন্টির একটি কলেজের সমাবেশে ২৪ মিনিট বক্তব্য রাখেন বাইডেন। তিনি বলেন, “আপনাদের সঙ্গে করমর্দনটা মিস করছি। কিন্তু আমরা দায়িত্বশীল আচরণের চষ্টা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের অনেকেই নিজেদের গাড়িতে ছিলেন, মাস্ক পরাসহ সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখেন। এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানান বাইডেন।
ট্রাম্পের সমাবেশকে করোনাভাইরাসের ‘সুপারস্প্রেডার’ অনুষ্ঠান আখ্যা দিয়ে বাইডেন বলেন, “ট্রাম্প মহামারীর হাল ছেড়ে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে এখন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে।”
মাস্ক পরার ওপর জোর দিয়ে বাইডেন বলেন, “এটি কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য নয়, এটি দেশপ্রেমীর দায়িত্ব।”