যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই করোনাভাইরাসের টিকা বিতরণের তোড়জোড় শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। অঙ্গরাজ্যগুলোকে এর প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু এ উদ্যোগ বিপজ্জনক মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তড়িঘড়ি এমন উদ্যোগের পেছনে রাজনৈতিক চাপেরও অভিযোগ উঠেছে।
Published : 03 Sep 2020, 11:03 PM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প গতমাসে রিপাবলিকানদের জাতীয় সম্মেলনে পার্টি মনোনয়ন পাওয়ার পর এবছর শেষের আগেই তার প্রশাসনের কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়া শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর ওপরই তিনি এখন জোর দিচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ৩ নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এর দুইদিন আগে ১ নভেম্বরের মধে্যই টিকা বিতরণের জন্য সব অঙ্গরাজ্যকে প্রস্তুতি নিয়ে ফেলতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি)।
ট্রাম্প প্রশাসনের এমন উদ্যোগের পেছনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে ডেমোক্র্যাটরা এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। সিনেটের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের রাজনৈতিক চাপের কাছে মাথা নত করার অভিযোগ করেছেন সিডিসি’র বিরুদ্ধে।
তাছাড়া, এই রাজনৈতিক চাপের মুখে নিরাপদ ও কার্যকর টিকার জন্য সংশ্লিষ্ট সব প্রক্রিয়া শেষের আগেই তা বিতরণ করার উদ্যোগে বিপদ দেখছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা৷ নির্বাচনের আগে টিকা বিতরণ স্পষ্টতই চাপের মুখে করা হচ্ছে বলে অভিমত অ্যারিজোনার এক সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞের।
করোনাভাইরাস সংকট এবং এর পরিণতিতে দেখা দেওয়া অর্থনৈতিক বিপর্যয় সামাল দেওয়ায় ব্যর্থতা ঢাকতে প্রশাসন তড়িঘড়ি টিকা বিতরণ করতে চাইছে বলে মনে করছেন সমালোচকরা।
গতমাসে বিশ্বের প্রথম করোনাভাইরাসের টিকা হিসাবে রাশিয়া স্পুৎনিক-ভি অনুমোদন করেছে। তৃতীয় ধাপের টিকা পরীক্ষার আগেই রাশিয়ার এ টিকা অনুমোদনের ফলে বৈজ্ঞানিক, গবেষক ও চিকিৎসকরা টিকাটি নিয়ে ঘোর সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। এবার যুক্তরাষ্ট্রের টিকা নিয়ে তোড়জোড়েও একই সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে।
কারণ, তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় সাফল্য আসার পরই টিকা চূড়ান্ত হতে পারে৷ কোনোরকম ঝুঁকি এড়াতে সবদিক বিবেচনা করে টিকার ছাড়পত্র দেওয়াই বাঞ্ছনীয়৷ একাজে বেশ কিছুটা সময় প্রয়োজন হয়৷ কিন্তু এইসব প্রক্রিয়া শেষ করে নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ সম্ভব না বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷