বেলারুশে বিতর্কিত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর পুন-নির্বাচনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ তীব্রতর হতে থাকার মধ্যে রাষ্ট্রীয় টিভি’র কর্মীরাও কাজ ফেলে রাস্তায় নেমেছেন। এ পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক গণভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো।
Published : 17 Aug 2020, 09:31 PM
বিবিসি জানায়, সোমবার টিভি কর্মীরা সেন্সরশিপ এবং নির্বাচনী ফলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা কাজ না করায় বাধ্য হয়ে টিভিতে পুরনো অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।
গত ৯ অগাস্ট বেলারুশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিনই বর্তমান প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোকে ষষ্ঠ মেয়াদের জন্য বিজয়ী (৮০ শতাংশ ভোট) ঘোষণা করা হলে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে রাতেই বিক্ষোভ শুরু হয়। তারপর থেকে দেশটিতে টানা আন্দোলন চলছে।
প্রধান বিরোধী প্রার্থী স্ভেতলেনা তিখানোভস্কিয়া ভোট জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে গেলে তাকে সেখানে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখা হয় বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ পায়। পরদিন তিনি দেশত্যাগ করে প্রতিবেশী লিথুয়ানিয়ায় আশ্রয় নেন।
১৯৯৪ সাল থেকে বেলারুশের ক্ষমতায় আছেন লুকাশেঙ্কো। এবারের মত এত বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জে গত ২৬ বছরে তাকে আর পড়তে হয়নি।
টানা বিক্ষোভের মুখে সোমবার লুকাশেঙ্কো ক্ষমতা ভাগাভাগি করা এবং সংবিধান পরিবর্তনে ইচ্ছুক বলে জানালেও কোনও নতুন নির্বাচন করে কিংবা চাপের মুখে তা করতে রাজি নন বলেন স্পষ্ট করে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, তিখানোভস্কিয়া জানান, তিনি অস্থায়ী সরকারের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।
বিক্ষোভকারীরা নির্বাচন ঘিরে আন্দোলনের সময় পুলিশি নিপীড়ন ও ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, আটকদের মুক্তি এবং নতুন করে নির্বাচন চাইছেন। তবে লুকাশেঙ্কো নতুন নির্বাচন দিতে কোনওভাবেই রাজি নন।
সোমবার তিনি সমর্থকদের বলেন, তার প্রাণ থাকতে নতুন নির্বাচন হবে না। তবে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থায় তিনি বলেন, ‘‘আমরা গণভোট আয়োজনের মাধ্যমে পরিবর্তন আনতে পারি। সেটি হলে আমি আমার সাংবিধানিক ক্ষমতা হস্তান্তর করব। কিন্তু সেটি চাপে পড়ে বা বিক্ষোভের কারণে করব না।”
‘‘হ্যাঁ, আমি সাধু নই। আপনারা আমার কঠিন দিক সম্পর্কে জানেন। আমি চিরদিন ক্ষমতায় থাকব না। কিন্তু যদি আপনারা আপনাদের প্রথম প্রেসিডেন্টকে টেনে নামাতে চান তবে আপনারা প্রতিবেশী দেশগুলো এবং বাকি সবকিছু টেনে নামাবেন।”
লুকাশেঙ্কো এও বলেন, গণভোটের পর তিনি পার্লামেন্ট বা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারেন যদি সেটি জনগণ চেয়ে থাকে।
এদিকে, লুকাশেঙ্কোর বক্তব্যের আগে লিথুনিয়া থেকে এক ভিডিও বার্তায় প্রধান বিরোধী প্রার্থী তিখানোভস্কিয়া নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশকে লুকাশেঙ্কোর পক্ষ ত্যাগ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘‘যদি তারা এখনও পক্ষ ত্যাগ করে তবে তাদের অতীত আচরণ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” নতুন করে নির্বাচন বিষয়ে তিখানোভস্কিয়া বলেন, একটি আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে নতুন করে স্বাধীন ও স্বচ্ছ নির্বাচনের আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে।
‘তার আগের এই সময়ে একজন জাতীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব নিতে আমি প্রস্তুত।”