বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সাড়ে ৬ লাখ তরুণ-তরুণীকে দেশটি থেকে বের করে দিতে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যে পরিকল্পনা নিয়েছিল, তা আটকে দিয়েছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট।
Published : 19 Jun 2020, 01:16 PM
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে নেয়া ‘ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস’ (ডিএসিএ) প্রকল্পে ওই তরুণ-তরুণীদের যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ীভাবে থাকা ও কাজের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
বাবা-মা’র সঙ্গে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া এ অনিবন্ধিতরাই ‘ড্রিমার্স’ নামে পরিচিত। তাদের বহিঃসমর্পণ আটকাতে ২০১২ সালে ওবামা প্রশাসন ডিএসিএ/ডাকা বা ড্রিমার্স প্রকল্প নিয়েছিল। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্প এ সুরক্ষা কর্মসূচি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন।
বৃহস্পতিবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারক কর্মসূচিটি বাতিলে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনার বিপক্ষে অবস্থান নেন বলে বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওবামা আমলের এ কর্মসূচি বাতিলে ২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্তকে আগেই ‘বিধিবহির্ভূত’ বলেছিল নিম্ন আদালত।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারক নিম্ন আদালতের দেয়া রায় বহাল রাখার পক্ষে অবস্থান নেন, বিপক্ষে থাকেন ৪ জন।
রক্ষণশীল হিসেবে খ্যাত প্রধান বিচারক জন রবার্টস এদিন সুপ্রিম কোর্টের চার উদারপন্থি বিচারকের সঙ্গে একত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের নেয়া পরিকল্পনার বিরোধিতা করেন।
ড্রিমারদের সুরক্ষা বাতিলে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের পদক্ষেপকে ‘খামখেয়ালি ও অবিবেচনাপ্রসূত’ কাজ বলে অভিহিত করেন তারা।
সুপ্রিম কোর্টের আদেশের ফলে অস্থায়ীভাবে থাকা প্রায় সাড়ে ৬ লাখ তরুণ-তরুণী যুক্তরাষ্ট্রে আরও দুই বছর কাজ করার সুযোগ পেলেন।
সুপ্রিম কোর্টের এ আদেশের পরও ট্রাম্প ডিএসিএ প্রকল্প বাতিলে ফের পদক্ষেপ নিতে পারবেন। যদিও নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তিনি এ বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আইনি লড়াইয়ে জড়াবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
“ডিএসিএ কর্মসূচি কিংবা এটি বাতিল, কোনটি ভাল নীতি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিইনি আমরা। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সংশ্লিষ্ট সংস্থা তাদের পদক্ষেপের পক্ষে যৌক্তিক ব্যাখ্যা হাজিরের নিয়ম যথাযথভাবে মেনেছিল কিনা, সে বিষয়ে,” ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস।
সুপ্রিম কোর্টের এ আদেশের কড়া সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকদের অবস্থান রিপাবলিকান ও রক্ষণশীলদের জন্য ‘চপেটাঘাত’, বলেছেন তিনি।
“ডিএসিএ নিয়ে আইনি সমাধান চেয়েছিলাম, রাজনৈতিক নয়। এখন পুরোটাই আবার নতুন করে শুরু করতে হবে,” বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’ এর ডেমোক্র্যাট স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। ড্রিমারদের সুরক্ষায় স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।