ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নতুন জোট সরকার গঠনে ব্যর্থ হওয়ার পর দেশটির আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
Published : 30 May 2019, 02:38 PM
ফলে জাতীয় নির্বাচনের দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দেশটিতে আরেকটি নতুন নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে; আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
গত ৯ এপ্রিল ইসরায়েলে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ইসরায়েলি পার্লামেন্ট কেনেসেটের ১২০টি আসনের মধ্যে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি ৩৫ আসনে জয় পায়। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য অন্তত ৬১টি আসন পেতে হলেও ইসরায়েলের ইতিহাসে কোনো দলই কখনো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। দেশটিতে সবসময়ই জোট সরকার ক্ষমতায় থেকেছে।
নির্বাচনের ফলাফলে ডানপন্থি জোট গঠনের মাধ্যমে নেতানিয়াহুর সামনে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ খুলে যায়, কিন্তু বুধবার মধ্যরাতের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জোট গঠনে ব্যর্থ হন তিনি।
এরপরই নবনির্বাচিত আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেয়। ভেঙে দেওয়ার পক্ষে ৭৪টি ও বিপক্ষে ৪৫টি ভোট পড়ে।
ইসরায়েলের ইতিহাসে এই প্রথম একজন মনোনীত প্রধানমন্ত্রী সরকার গঠনে ব্যর্থ হলেন।
নেতানিয়াহু তার ডানপন্থি ব্লকের কট্টর অর্থোডক্সপন্থিদের সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর পুরনো দ্বন্দ্বের মীমাংসা করতে না পারার কারণেই জোট গঠনে ব্যর্থ হন। দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা করানোর বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হন তিনি।
এই অচলাস্থার মধ্যে ঘড়ির কাঁটা মধ্যরাতের দিকে এগিয়ে গেলে লিকুদ পার্টি নেতানিয়াহুর পুরনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগডোর লিবারম্যানকে ক্ষমতালিপ্সু অভিহিত করে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিতে চাইছেন বলে অভিযোগ করে।
অভিযোগের মুখেও লিবারম্যান নিজের অবস্থানে অনড় থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জোট গঠনের আলোচনা আর আলোর মুখ দেখেনি।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভিলিনের পার্লামেন্টের অন্য কাউকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানানোর সম্ভাবনা ঠেকাতে নেতানিয়াহু নতুন নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নেন। লিকুদ পার্টির এমপিরা পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেন।
ভোটের পর গণমাধ্যমের সামনে নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা শাণিত, পরিষ্কার নির্বাচনী প্রচারণা চালাবো যা আমাদের বিজয় এনে দিবে। আমরা জিতবো, আমরা জিতবো এবং জনতা বিজয়ী হবে।”
এ পরিস্থিতিতে আগামী সেপ্টেম্বরে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন নেতানিয়াহু। জুলাই পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকলেই তিনি ইসরায়েলের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী থাকার নতুন রেকর্ড গড়বেন।