সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশুগজিকে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটের ভিতরেই খুন করা হয়েছে বলে ধারণা তুরস্কের কর্তৃপক্ষের।
Published : 07 Oct 2018, 01:49 PM
শনিবার তুরস্কের দুটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একথা জানিয়েছে।
পাঁচ দিন আগে ইস্তাম্বুলের কূটনৈতিক ওই মিশনে প্রবেশ করার পর থেকেই খাশুগজি নিখোঁজ রয়েছেন।
রয়টার্সকে তুরস্কের এক কর্মকর্তা বলেছেন, “তুরস্ক পুলিশের প্রাথমিক মূল্যায়ন অনুযায়ী খাশুগজিকে সৌদি আরবের ইস্তাম্বুল কন্সুলেটেই খুন করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, খুনটি পূর্বপরিকল্পিত আর খুন করার পরই লাশটি কনসুলেট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।”
খাশুগজিকে খুন করা হয়েছে, এই বিশ্বাস কেন তাদের মধ্যে কাজ করছে তা বলেননি ওই কর্মকর্তারা।
রোববার ইস্তাম্বুলের সৌদি কন্সুলেটের একটি সূত্র ‘কনসুলেটের ভিতরে খাশুগজিকে হত্যা করার’ অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এক বিবৃতিতে ওই সূত্র অভিযোগটিকে ভিত্তিহীন দাবি করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, খাশুগজির অন্তর্ধান নিয়ে তদন্তে অংশ নিতে সৌদি তদন্তকারীদের নিয়ে একটি নিরাপত্তা দল শনিবার ইস্তাম্বুলে এসেছে।
শনিবার সৌদি আরবের কনসাল জেনারেল রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, তার দেশ খাশুগজিকে খোঁজায় সহায়তা করছে। এ সময় খাশুগজির সম্ভাব্য অপহরণ নিয়ে শুরু হওয়া কথাবার্তাও বাতিল করে দেন তিনি।
সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক খাশুগজি গত বছর থেকে ওয়াশিংটনে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে ছিলেন। বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র জোগাড়ে গত মঙ্গলবার বাগদত্তাকে বাইরে রেখে তিনি ইস্তাম্বুলের কনসুলেটে প্রবেশ করেছিলেন বলে দাবি তার বাগদত্তা হেটিস সেনগিজের। এরপর থেকেই খাশুগজির আর কোনো খোঁজ নেই।
তারপর থেকে তুরস্ক ও সৌদি কর্মকর্তারা তার অন্তর্ধান বিষয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়ে আসছেন। তুরস্ক বলছে, খাশুগজি ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটে প্রবেশের পর সেখান থেকে বেরিয়ে গেছেন, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি; অপরদিকে সৌদি আরবের দাবি, কন্সুলেটে প্রবেশের কিছু সময় পরপরই খাশোগি সেখান থেকে চলে যান।
তুরস্কের সরকারি কৌঁসুলিরা খাশুগজির অন্তর্ধান নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে বলে শনিবার তুরস্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ানের রাজনৈতিক দল একে পার্টির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, খাশুগজি কোথায় আছেন কর্তৃপক্ষ তা খুঁজে বের করবে।
খাশুগজি গত বছরখানেক ধরেই কাতার, কানাডা, ইয়েমেনে যুদ্ধ ও ভিন্নমতাবলম্বীদের দমনে সৌদি রাজপরিবারের এখনকার নীতির কঠোর সমালোচনা করে আসছিল।
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ঘটনায় বিরোধী শিবিরে অবস্থান করা রিয়াদ ও আঙ্কারার সম্পর্ক এমনিতেই নাজুক। খাশুগজির ‘নিখোঁজকাণ্ডে’ তার আরও অবনতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা পর্যবেক্ষকদের।