পাকিস্তানের একাদশ জাতীয় নির্বাচনের অনানুষ্ঠানিক ফলে কয়েকটি বিস্ময়কর ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে। বড় বড় নেতাদেরকে ভোটে হোঁচট খেতে দেখা গেছে নিজেদেরই শক্ত ঘাঁটিতে। যদিও বেশিরভাগ দলই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেছে।
Published : 27 Jul 2018, 06:37 PM
দেশটির ইংরেজি ভাষার দৈনিক ‘ডন’ এর খবর অনুযায়ী, সর্বশেষ ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) এর প্রধান শাহবাজ শরিফ চারটির মধ্যে তিনটি আসনেই হেরে গেছেন।
তিনি শুধুমাত্র লাহোরে একটি আসনে জয়লাভ করেন। বাকি করাচি, সোয়াত ও দেরা গাজি খান আসনে জিততে ব্যর্থ হয়েছেন।
বরাবরই নিজেদের শক্তঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আসনগুলোতে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) প্রধান বিলওয়াল ভুট্টো এবং জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলাম ফজল (জেইউআই-এফ) প্রধান মওলানা ফজলুর রহমানও হেরে গেছেন।
বিলওয়াল প্রথমবারের মত ভোট যুদ্ধে নেমে তিনটি আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তার মধ্যে মালাকান্দে (এনএ-৮) পিটিআই প্রার্থী জুনাইদ আকবরের কাছে তিনি হেরে যান। তবে তার জন্য সবচেয়ে বড় অঘটন ছিল করাচির লিয়ারি আসনে পিটিআই নেতা শকুর শাদের কাছে হেরে যাওয়া।
নিজ এলাকা লারকানায় বড় জয় পেয়েছেন বিলওয়াল। অন্যদিকে, নিজ শহর দেরা ইসমাইল খানে (এনএ-৩৯) হেরে গেছেন জেইউআই-এ প্রধান।
আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি) প্রধান আসফান্দিয়ার ওয়ালি খানও নিজ এলাকায় পিটিআই প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন।
অন্যদিকে, নিজ দলের মত ব্যক্তিগত লড়াইয়েও চমক দেখিয়েছেন তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ইমরান খান। নির্বাচনে পাঁচটি আসনে লড়াই করে সবগুলোতেই জিতেছেন তিনি।
এবারের নির্বাচনে হেরে যাওয়া আরেক প্রভাবশালী নেতা চৌধুরি নিসার আলি খান। ১৯৮৫ সাল থেকে পাকিস্তানের সবগুলো সংসদের সদস্য ছিলেন তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসিও দুই আসনের দুইটিতেই হেরে গেছেন। তার মধ্যে ইসলামাবাদে তিনি ইমরান খানের কাছে এবং নিজ শহর মুরিতে তিনি পিটিআই নেতা সাদাকাত আব্বাসির কাছে হেরে যান।
অন্যদিকে, ইসলামাবাদ ছাড়াও নিজ শহর মিয়ানওয়ালি, করাচি, লাহোর, বান্নুতে জয়লাভ করেন ইমরান।
স্রোতের অনুকূলে থাকতে পিপিপি থেকে পিটিআই’য়ে যোগ দেওয়া নজর মোহাম্মদ গন্দাল, নাদিম আফজাল চান এবং ফেরদৌস আশিক আওয়ানের মত অভিজ্ঞ কয়েকজন নেতাও হেরে গেছেন।
তারা পিটিআই থেকে ভোটে অংশ নিলেও সম্ভবত দল পরিবর্তন করায় তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারেননি ভোটাররা।
তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফি পিটিআই প্রার্থীকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছেন।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিএমএল-এন নেতা খাজা মুহাম্মদ আসিফও ভোট পুনর্গণনায় পিটিআই নেতা উসমান দারকে সামান্য ব্যবধানে হারাতে সক্ষম হন।