উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সৎ ভাই কিম জং ন্যামের মৃত্যু কি কারণে ঘটেছে তা এখনও নির্ধারণ করা যায়নি বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।
Published : 21 Feb 2017, 04:31 PM
ডিএনএ-র কোনও নমুনা না পাওয়ায় লাশের পরিচয়ও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে শনাক্ত করা যায়নি বলেও জানিয়েছেন তারা।
১৩ ফেব্রুয়ারি কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ন্যামকে হত্যা করা হয়। দ্রুত ক্রিয়া করে এমন ধরনের কোনও বিষ প্রয়োগে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী নিহত ব্যক্তির নাম কিম জং ন্যাম বলে উল্লেখ করেছিলেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক ডাঃ হিশাম আব্দুল্লাহ বলেন, “মৃত্যুর কারণ ও নিহতের পরিচয় এখনও নির্ধারণ করা যায়নি।”
নিহতের নিকটতম আত্মীয় কেউ এগিয়ে না আসায় কোনও ডিএনএ নমুনা পাওয়া যায়নি এবং লাশের ময়নাতদন্তে হার্ট অ্যাটাক বা শরীরে সূঁচের খোঁচার কোনও চিহ্নও পাওয়া যায়নি বলে সাংবাদিকদের জানান হিশাম আবদুল্লাহ।
দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের বিশ্বাস উত্তর কোরিয়ার এজেন্টরা কিম জং ন্যামকে হত্যা করেছে।
চীনা এলাকা ম্যাকাওয়ে বসবাস করতেন ন্যাম, সেখানে চীনা কর্তৃপক্ষের সুরক্ষা পেতেন তিনি।
ন্যামের নিকটাত্মীয়দের তার লাশের মালিকানা দাবি করা এবং তার হত্যার তদন্তে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে মালয়েশিয়া।
কিন্তু উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা লাশের আশু হস্তান্তর দাবি করেছেন। এ নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
কুয়ালালামপুরে নিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত মালয়েশিয়ার তদন্তকে পক্ষপাতমূলক ও নিহত ব্যক্তি কিম জং ন্যাম নয় দাবি করার পর উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
উত্তর কোরীয় রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে তলব করে পিয়ংইয়ং থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকেও ডেকে পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া।
সোমবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত ক্যাং চোল বলেছেন, তার দেশ মালয়েশিয়ার তদন্তে ‘বিশ্বাস করে না’।
মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, তদন্ত নিরপেক্ষ হবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রদূতের বিবৃতি পুরোপুরি অনাহূত। তার মন্তব্য কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্জিত। কিন্তু মালয়েশিয়া নিজ নীতিতে অটল থাকবে।”
ন্যাম হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে উত্তর কোরিয়ার এক নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশীয় পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর উত্তর কোরিয়ার চার নাগরিক মালয়েশিয়া ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
সোমবার জাপানি ব্রডকাস্টার ফুজি টিভিতে প্রকাশিত কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দুই নারীকে ন্যামের ওপর হামলে পড়তে দেখা গেছে, এর পরপরই ন্যামকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে চিকিৎসা সহায়তা চাইতে দেখা যায়।
তবে ওই ফুটেজের সত্যাসত্য যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।