জার্মানির কোলন শহরে বর্ষবরণ উৎসবে নারীদের উপর যৌন নিপীড়নের জন্য অভিবাসীদের দায়ী করেছেন ঘটনাটি তদন্তের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা। বলা হচ্ছে, তারা বেশির ভাগই উত্তর অফ্রিকান ও আরব নাগরিক।
Published : 11 Jan 2016, 07:13 PM
সোমবার নর্থ রাইন ওয়েস্টফাইলিয়া (এনআরডব্লিউ) রাজ্যের (কোলন প্রদেশটির সবচেয়ে বড় শহর) সংসদীয় কমিশন বর্ষবরণের উৎসবে ঠিক কি ঘটেছিল তা জানতে পুলিশ ও অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
সেখান থেকে পাওয়া তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রদেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাইফ ইয়েগা বলেন, নববর্ষের সন্ধ্যায় কোলনে সংগঠিত সবগুলো হামলার পেছনে বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিরা রয়েছে।
“প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য, কোলন পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন এবং কেন্দ্রীয় পুলিশের বর্ণনা অনুযায়ী, মূলত অভিবাসী বা অভিবাসন প্রত্যাশীরাই ওই অপরাধের জন্য দায়ী।”
“সবকিছুই উত্তর আফ্রিকান ও আরবদের দিকে আঙুল তুলছে। এখন পর্যন্ত তদন্তে আমরা যা জানতে পেরেছি, তার ভিত্তিতে বলা যায়, গত বছর জার্মানিতে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীরাই এর জন্য দায়ী।”
ওই দিনের ঘটনার পর ৫১৬ টি মামলা জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ অভিযোগই যৌন হয়রানি সংক্রান্ত। কোলনে বর্ষবরণ উদযাপনকালে নারীদের ওপর ব্যাপক সহিংসতার তদন্তের বিস্তারিত সোমবারই প্রকাশ পেল। রাইফ এ ঘটনার জন্য পুলিশের ব্যর্থতা এবং ভুলের কড়া সমালোচনা করেন।
বিবিসি জানায়, জার্মান ভাষায় লেখা একটি প্রতিবেদনে রাজ্যস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাইফ ইয়েগা বলেছেন, “সহিংসতার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাষ্ট্রীয় পুলিশ ১৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে। তাদের কেউই জার্মান নাগরিক নয়।”
“এই ১৯ জনের মধ্যে ১৪ জন মরোক্কো এবং আলজেরিয়ার। সন্দেহভাজনদের ১০ জন আশ্রয়প্রার্থী। এদের ৯ জন গতবছর সেপ্টেম্বরে জার্মানিতে পৌঁছেছে। অন্য ৯ জন খুব সম্ভবত জার্মানিতে অবৈধভাবে বাস করছে।”
এর আগে গত শুক্রবারেও তিনি জানিয়েছিলেন, ফেডারেল পুলিশ ৩১ জন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে ১৮ জনই আশ্রয়প্রার্থী।
বর্ষবরণের দিনে নারীদের ওপর ব্যাপক যৌন সহিংসতার ঘটনাটি জার্মানিকে স্তম্ভিত করেছে। এ ঘটনার জন্য শরণার্থীদের প্রতি উদারনীতির কারণে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেলের ওপরও যথেষ্ট চাপ তৈরি হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ দায়ের না হলেও পুলিশ বলছে, নারীদের ওপর আশ্রয়প্রার্থী ও অবৈধ অভিবাসীরাই এ সহিংসতা চালিয়েছে।
কোলনে ওই ঘটনার পরপরই এর প্রতিবাদে জার্মানিতে ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে চ্যান্সেলর মের্কেল নিপীড়নকারীদের জার্মানি থেকে বিতাড়িত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
জার্মান বিচারমন্ত্রী বলছেন, তার ধারণা, কোলন শহরের এ সহিংসতা পরিকল্পিত।