পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) এই মৃত্যুর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ব্লাসফেমির অভিযোগে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে তারা ভীষণ উদ্বিগ্ন।
Published : 21 Sep 2024, 02:29 PM
পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশে ধর্ম অবমাননায় অভিযুক্ত এক চিকিৎসক পুলিশের সঙ্গে ‘গোলাগুলিতে’ নিহত হয়েছেন।
বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে।
নিহত শাহনেওয়াজ কানভার সিন্ধু প্রদেশের উমরকোট জেলার চিকিৎসক।
তার বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে অবমাননা করা এবং সামাজিক মাধ্যমে ধর্মীয় উসকানিমূলক তথ্য শেয়ার করার অভিযোগ ছিল। হত্যার দুই দিন আগে থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।
সিন্ধু প্রদেশে এক সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়ে দুটি একই ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।
পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্তব্যরত দুই পুলিশ সিন্ধুর মিরপুর খাসে শহরে মোটরসাইকেল আরোহী দুই ব্যক্তিকে থামতে বলে। কিন্তু আরোহী দুই ব্যক্তি না থেমে গুলি চালায় এবং পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়।
সন্দেহভাজনদের মধ্যে একজন মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান, অপরজন নিহত হন।
স্থানীয় পুলিশ প্রধানের দাবি, গোলাগুলির পরেই পুলিশ সদস্যরা জানতে পারেন, নিহত ব্যক্তি হলেন সেই চিকিৎসক, যাকে পুলিশ ধর্ম অবমাননার দায়ে খুঁজছিলেন।
আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তা খাস আসাদ চৌধুরী বিবিসি উর্দুকে বলেন, ডা. কানভার দুর্ঘটনাবশত তার সঙ্গীর গুলিতে আহত হন।
তবে কানভারের এক আত্মীয় দাবি করেছেন, চিকিৎসকে মিথ্যা অভিযোগে এনকাউন্টারে হত্যা করা হয়েছে। যদিও স্থানীয় পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সিন্ধু প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়া-উল-হাসান লিনজার এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এক সপ্তাহ আগে সিন্ধুর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এক শহরে পুলিশ কর্মকর্তা এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে আরেক সন্দেহভাজনকে হত্যা করেন।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ধর্ম অবমাননায় অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে’ তারা উদ্বিগ্ন।
পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইন অনুযায়ী, ইসলাম বা ইসলামী ধর্মের ব্যক্তিত্বদের অবমাননার দায়ে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননাকারীদের ওপর হামলা বেড়েছে। গত জুনে ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ অবমাননার অভিযোগে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মাদিয়ানের একটি পুলিশ স্টেশনে ঢুকে এক পর্যটককে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করে বিক্ষুব্ধরা।