এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিউ মেক্সিকোর বৃহত্তম শহর আলবাকার্কির মুসলিম সম্প্রদায়কে কাঁপিয়ে দিয়েছে।
Published : 16 Aug 2022, 12:17 PM
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যে চার মুসলিমকে খুনের প্রধান সন্দেহভাজনের ছেলেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা পুলিশের।
সোমবার একটি জামিন আবেদনের শুনানিতে মার্কিন ফেডারেল আইনজীবীদের পেশ করা নথির ভাষ্য অনুযায়ী, মোবাইল ফোনের তথ্যে দেখা গেছে শাহীন সৈয়দ (২১) নিউ মেক্সিকোর আলবাকার্কি শহরে ওই একই এলাকায়ই ছিলেন যেখানে ৫ অগাস্টের ওই সময় তার বাবা ২৫ বছর বয়সী উদ্যোক্তা নায়ীম হুসাইনকে হত্যা করেন।
শুনানিতে শাহীনের জামিনের আবেদন খারিজ হয়।
এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিউ মেক্সিকোর বৃহত্তম শহরটির মুসলিম সম্প্রদায়কে কাঁপিয়ে দিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
শাহীনের আইনজীবী জন অ্যান্ডারসন বলেছেন, (শাহীনের বিরুদ্ধে) যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো ‘খুব দুর্বল ও অনুমাননির্ভর’।
পুলিশ গত সপ্তাহে শাহীনে বাবা মুহাম্মদ আতিফ সৈয়দের (৫১) বিরুদ্ধে ওই খুনগুলোর দুটির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে। ওই চারটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ব্যক্তিগত ক্ষোভের সম্পর্ক আছে, এমন অভিযোগ করে সেগুলো আন্তঃমুসলিম সাম্প্রদায়িক (শিয়া-সুন্নি) বিদ্বেষ প্রসূত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুয়া ঠিকানা দেওয়ার অভিযোগে শাহীন সৈয়দ ফেডারেল অস্ত্র আইনের কয়েকটি ধারায় গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার হন।
আদালতে পেশ করা নথিতে বলা হয়েছে, “আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা সম্প্রতি এমন প্রমাণ পান তাতে ওই হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে শাহীন সৈয়দের জড়িত থাকার ইঙ্গিত আছে।”
মোবাইল ফোনের টাওয়ারের তথ্য বিশ্লেষণ করে এফবিআইয়ের গোয়েন্দাদের ধারণা হয়েছে, খুন হওয়া দুই মুসলিম ব্যক্তির জানাজা পড়ার পর ৫ অগাস্ট নায়ীম হুসাইন চলে যাচ্ছেন এটি দেখতে পান শাহীন, তারপর তিনি নায়ীমকে অনুসরণ করে সেই পার্কিং লট এলাকায় যান যেখানে তাকে (নায়ীমকে) গুলি করে হত্যা করা হয়।
আদালতে পেশ করা নথিতে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, “গুলিবর্ষণের আগে-পরে মুহম্মদ আতিফ সৈয়দ ও শাহীন সৈয়দের মধ্যে হওয়া টেলিফোন কল দ্রুত নজরদারি কলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে।”
আইনজীবীরা অন্য গুলিবর্ষণের ঘটনাগুলোর বিষয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করেননি।
১ অগাস্ট মুহাম্মদ আফজাল হুসাইনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অন্তত দুই জন জড়িত ছিল বলে বিশ্বাস তার ভাই ইমতিয়াজ হুসাইনের।
নগর পরিকল্পনা বিষয়ক পরিচালক আফজাল হুসাইনকে হত্যায় একটি পিস্তল ও রাইফেল ব্যবহার করা হয়। পুলিশ রেকর্ড ও ইমতিয়াজের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৫ থেকে ২০ সেকেন্ডের মধ্যে আফজালকে লক্ষ্য করে ১৫ বার গুলি করা হয়।
ইমতিয়াজ বলেন, “এত অল্প সময়ের মধ্যে একজনের পক্ষে দুটি অস্ত্র ব্যবহার করা খুব কঠিন।”
নিহত নায়ীম হুসাইন ও আফজাল হুসাইন পরস্পরের পরিচিত বা আত্মীয় নন।
আফগান শরণার্থী মুহাম্মদ সৈয়দের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি আফজাল হুসাইনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও যে দুই জনকে হত্যা করা হয়েছে তারা হলেন ক্যাফে ম্যানেজার আফতাব হুসেইন (৪১) ও সুপারমার্কেটের মালিক মোহাম্মদ আহমাদি (৬২) । এর মধ্যে আহমাদিকে গত বছরের ৭ নভেম্বর হত্যা করা হয় । নিহতরা সবাই মুসলিম শিয়া সম্প্রদায়ের লোক।
পুলিশ জানিয়েছে, নায়ীম হুসাইন ও আহমাদির হত্যাকাণ্ডের চার্জশীট গঠনে তারা আইনজীবীদের সঙ্গে কাজ করছেন।