মিয়ানমারের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় পড়লেও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত কিছু এলাকাও এ দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
Published : 31 Mar 2025, 01:16 PM
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট মানবিক সংকটের মধ্যেই শহর ও গ্রামগুলোতে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী। দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) সামরিক জান্তা সরকারের এই কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
শুক্রবার দেশটির মধ্যাঞ্চলে হওয়া ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১৭০০ জনের মৃত্যু ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ভূমিকম্পে দেশটির প্রধান প্রধান সেতু ও মহাসড়কের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে দুর্যোগপূণ এলাকাগুলোতে প্রয়োজনীয় মানবিক ত্রাণ পাঠানো যাচ্ছে না বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।
এ পরিস্থিতির মধ্যেই জান্তা বাহিনী কিছু অঞ্চলে বিদ্রোহীদের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে।
দেশটির সবচেয়ে পুরনো জাতিগত বিদ্রোহী বাহিনী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, “ভূমিকম্পে জনগণ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও সামরিক বাহিনী বেসামরিকদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।”
গোষ্ঠীটি বলছে, ভূমিকম্পের পর যে পরিস্থিতি চলছে তাতে সামরিক বাহিনীর উচিত ছিল ত্রাণ প্রচেষ্টায় অগ্রাধিকার দেওয়া, কিন্তু তারা তা না করে ‘নিজেদের জনগণের ওপর হামলা চালাতে বাহিনী মোতায়েনের দিকেই’ মনোযোগ দিয়েছে।
এই সমালোচনার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে মিয়ানমারের জান্তার এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেননি।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের অনেকগুলো বিরোধী গোষ্ঠী জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছে আর জাতিগত বিদ্রোহী বাহিনীগুলো আগেই থেকেই তাদের অধিকার আদায়ের লড়াই চালিয়ে আসছে। জান্তা বিরোধী এসব মিলিত প্রতিরোধে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ তীব্র হয়ে উঠেছে।
শুক্রবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পে এ পরিস্থিতি থমকে দাঁড়ানোর পর সামরিক বাহিনী কারেন রাজ্যে বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে ত্রাণ সংস্থা ফ্রি বার্মা রেঞ্জার্স অভিযোগ করেছে। তারা জানিয়েছে, কেএনইউয়ের সদরদপ্তরের কাছে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
মিয়ানমারের ভূমিকম্প নিয়ে আসিয়ান জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল এক বৈঠকে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান মিয়ানমারে ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করতে অবিলম্বে একটি যুদ্ধবিরতি শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় পড়লেও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ব্যাপক আর বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত কিছু এলাকাও এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।