বাখমুতের লড়াইয়ে ৩০ হাজার রুশ সেনা হতাহত হয়েছে, বলছে পশ্চিমারা

রুশ ওয়াগনার বাহিনী নগরীটির পূর্বাঞ্চলের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে দাবি করেছে।তবে ইউক্রেইন বলছে, তারা এখনও হাল ছাড়েনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2023, 01:56 PM
Updated : 8 March 2023, 01:56 PM

পূর্ব ইউক্রেইনের বাখমুত নগরীর দখল নিতে গত ছয়মাস ধরে রুশ বাহিনী তুমুল লড়াই করছে। সেখানে এরইমধ্যে রাশিয়ার ২০ থেকে ৩০ হাজার সেনা হতাহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা।

তারা বলেন, যতটা দীর্ঘ সময় ধরে ও তীব্র আকারে সেখানে যুদ্ধ হয়েছে, তা সব পূর্বানুমানকে ছাড়িয়ে গেছে এবং বাখমুতকে কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলার আঘাতে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে বাখমুত।

 রুশ ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার বুধবার নগরীটির পূর্বাঞ্চলের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে দাবি করেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেইন বলছে, তারা এখনও হাল ছাড়েনি। প্রতিরোধ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

গত গ্রীষ্মে বাখমুতে যখন লড়াই শুরু হয় তখনই নগরীর প্রায় ৯০ শতাংশ বাসিন্দা প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়।

দনবাস অঞ্চলের ছোট্ট এই প্রশাসনিক নগরীটি এখন ধসে পড়া ভবন, উপড়ে পড়ে থাকা গাছের নগরীতে পরিণত হয়েছে।

নগরীর পূর্বাঞ্চল দখলের রাশিয়ার দাবির বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যদি এ দাবি সত্য হয় কিংবা রাশিয়ার কাছে বাখমুতের পতনও হয়, তাহলেও মস্কো অনেক কিছু হারিয়ে খুব সামান্যই অর্জন করতে পারবে বলে বিশ্বাস পশ্চিমা কর্মকর্তাদের।

অন্যদিকে, ইউক্রেইনের জন্য বাখমুত ‘রাশিয়ার অনেক সেনাকে হত্যা করার অসাধারণ একটি সুযোগ’ বলে মত এক পশ্চিমা কর্মকর্তার।

বাখমুত লড়াইয়ে ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যতটা দাবি করছে ততটা নয় বলে মত পশ্চিমা কর্মকর্তাদের।

কয়েকদিন আগে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বিষয়ক একটি বৈঠকে দেওয়া এক বিবৃতিতে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু দাবি করেছেন, এক ফেব্রুয়ারি মাসেই ইউক্রেইনের ১১ হাজার সেনা নিহত হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ ‍মাধ্যম টেলিগ্রামে ওই বিবৃতিটি পোস্ট করা হয় বলে জানায় বিবিসি।

বাখমুত যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে মূলত যুদ্ধ করছে তাদের ভাড়াটে যোদ্ধাবাহিনী ওয়াগনার। সম্প্রতি ওয়াগনার বাহিনীর সঙ্গে মস্কোর নানা বিষয়ে বিরোধের চিত্র বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

কয়েকদিন আগে ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন মস্কোর বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ অভিযোগ তুলেছেন। বলেছেন, যুদ্ধের জন্য মস্কো থেকে তাদের যে পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ ও যোদ্ধা পাঠানোর কথা ছিল তারা সেটা করেনি।

বাখমুত কে ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি বলে বর্ণনা করেছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

বলেছেন, ‘‘বাখমুত দখলে থাকলে ওই অঞ্চলে ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা লাইন ধরে সামনে আরো আক্রমণ চালানো সম্ভব হবে।”

যদিও রাশিয়ার আক্রমণের আরো বিস্তার ঘটানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলে জানান পশ্চিমা কর্মকর্তারা।

বরং ইউক্রেইন তাদের পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে আরো বেশি অত্যাধুনিক অস্ত্র পাচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া যান রয়েছে। তারা এখন তাদের নিজস্ব আক্রমণের পরিকল্পনা সাজাচ্ছে এবং আগামী মে মাসের আগেই তারা রুশ বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তারা।

Also Read: রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ অভিযোগ ওয়াগনার বাহিনীর