ইউক্রেইনকে সমর্থন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের জন্য ‘দ্বিতীয় আরেকটি ভিয়েতনাম’ পরিস্থিতি সৃষ্টির ঝুঁকি নিচ্ছে- বলেছেন রুশ বৈদেশিক গোয়েন্দা প্রধান।
Published : 07 Dec 2023, 09:44 PM
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈদেশিক গোয়েন্দা প্রধান সের্গেই নারিশকিন বলেছেন, ইউক্রেইনকে পশ্চিমারা যে সমর্থন দিচ্ছে, তাতে এই সংঘাত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘দ্বিতীয় ভিয়েতনামে’ পরিণত হবে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে আগ্রসন শুরু করে রাশিয়া। দীর্ঘ এই যুদ্ধে দুইপক্ষে হাজার হাজার সেনা ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। এই যুদ্ধের কারণে গত ছয় দশকে রাশিয়া ও পশ্চিমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে।
ইউক্রেইনকে ২৪ হাজার ৬শ’ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের সাহায্য এবং অস্ত্র দিয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেইনের পাল্টা আক্রমণ ব্যর্থ হয়েছে। ইউক্রেইনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা (এসভিআর)-এর হাউজ জার্নাল ‘দ্য ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভ’- এ এক নিবন্ধে সংস্থাটির প্রধান সের্গেই নারিশকিন বলেছেন, “সম্পদের পর সম্পদ আর মানুষ আত্মীভূত করতে করতে ইউক্রেইন একটি ‘কৃষ্ণ গহ্বরে’ পরিণত হবে।
“যুক্তরাষ্ট্র শেষমেষ নিজেদের জন্য ‘দ্বিতীয় আরেকটি ভিয়েতনাম’ পরিস্থিতি সৃষ্টির ঝুঁকি নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি নতুন প্রশাসনকে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে বলেছেন, নেটো-রাশিয়ার সরাসরি সংঘাত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করতে পারে। ইউক্রেইনে মার্কিন সেনা পাঠানোর বিষয়টি তিনি বারবার নাকচ করেছেন।
প্রভাবের দিক থেকে বলতে গেলে ভিয়েতনাম যুদ্ধ আর পূর্ব-পশ্চিম স্নায়ুযুদ্ধ ছিল অনেকটা একই। ভিয়েতনাম যুদ্ধে দক্ষিণ ভিয়েতনামের পক্ষ নিয়ে কমিউনিস্ট চীন ও সোভিয়েত ইউনিয়ন-সমর্থিত উত্তর ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
যুদ্ধে কয়েক লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে উত্তর ভিয়েতনামের জয় ও যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে যুদ্ধ শেষ হয়। ভিয়েতনামে ৫৮ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা নিহত হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে ওঠে যুদ্ধবিরোধী শক্তিশালী প্রতিরোধ আন্দোলন।
বুধবার ইউক্রেইনকে নতুন করে সামরিক সহায়তা দিতে রিপাবলিকানদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেন, “পুতিন (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট) ইউক্রেইনে জয়ী হলে সেখানেই থামবেন না। তিনি নেটো মিত্র দেশেও আক্রমণ করতে পারেন।
“তখন আমাদের এমন কিছু করতে হবে যা আমরা চাই না এবং যা আজ ঘটছে না: রুশ সেনাদের সঙ্গে মার্কিন সেনাদের লড়াই,” বলেন বাইডেন।