নতুন আইনে ধর্ষণের শিকার নারী ছাড়া অন্যদের বেলায় গর্ভপাত আপরাধ বলে গণ্য হবে।
Published : 03 Dec 2022, 07:25 PM
বিয়ে না করে যৌন সম্পর্কে জড়ালে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং এ জন্য সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ডের শাস্তির বিধান রেখে এ মাসে ইন্দোনেশিয়ায় পার্লামেন্ট একটি আইন পাস করতে যাচ্ছে বলে জানান দেশটির কর্মকর্তারা।
পাস হতে যাওয়া ওই ফৌজদারি দণ্ডবিধির আওতায় প্রেসিডেন্ট কিংবা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অবমাননা এবং ইন্দোনেশিয়ায় রাষ্ট্রীয় আদর্শবিরোধী যেকোনো দৃষ্টিভঙ্গিকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বলেও জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
নতুন ওই আইনটির খসড়া কয়েক দশক ধরে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং আগামী ১৫ ডিসেম্বর নতুন ওই ফৌজদারি দণ্ডবিধি পাস হতে পারে বলে রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার উপআইনমন্ত্রী এডওয়ার্ড ওমর শরিফ হিয়ারিয়েজ।
তিনি বলেন, ‘‘ইন্দোনেশীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সংগতি রেখে অপরাধ দমন বিধিটি প্রণয়ন করতে পেরে আমরা গর্বিত।”
যদি ওই দণ্ডবিধি পাস হয় তবে ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকদের পাশপাশি বিদেশিদের বেলাতেও তা প্রযোজ্য হবে।
ব্যবসায়ীরা আইনটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, পর্যটকদের কাছে ছুটি কাটানোর পছন্দের স্থান এবং বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়ার যে অবস্থান এতদিন ধরে বিরাজমান আছে নতুন আইনে তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি ইসলামি সংগঠন খসড়া আইনটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তবে বিরোধীরা বলছেন, আইনটি ১৯৯৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর পতনের পর কার্যকর উদার সংস্কারগুলোর পরিপন্থী।
এই দণ্ডবিধির পূর্ববর্তী খসড়াটি ২০১৯ সালে পাস হওয়ার কথা ছিল। তবে তখন এ নিয়ে ইন্দোনেশিয়াজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের দাবি ছিল, এ ধরনের আইন নাগরিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করবে।
যার জেরে আইনটির খসড়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে দাবি করেছে সরকার। বলেছে, গত কয়েক মাস ধরে খসড়ায় পরিবর্তনের বিষয়গুলো সম্পর্কে তথ্য প্রদানের জন্য সারাদেশে জনসাধারণের পরামর্শ গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, আইনে খুব সামান্যই পরিবর্তন এসেছে।
নতুন আইনে ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভপাত ছাড়া অন্যান্য গর্ভপাতকে আপরাধ এবং ‘কালো জাদু’ করলে তার জন্য কারাদণ্ডের বিধান বহাল রাখা হয়েছে।
সবশেষ গত ২৪ নভেম্বর যে খসড়াটি তৈরি করেছে তার ভিত্তিতে রয়টার্স বলছে, বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ঘটনায় সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড হবে। অভিযোগ করার এখতিয়ার শুধু ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মতো সীমিতসংখ্যক মানুষের কাছে থাকবে।