যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদেরকে হাতকড়া পরিয়ে, পায়ে শেকল বেঁধে ভারতে ফেরত পাঠানো নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
Published : 06 Feb 2025, 08:31 PM
প্রথম দফায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বুধবার ফেরত পাঠানো হয়েছে ১০৪ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে। বিমানে হাতে হাতকড়া, পা শিকলে বেঁধে তাদেরকে আনা হয়েছিল বলেই জানিয়েছেন এই অভিবাসীদের একজন।
পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসরে মার্কিন সামরিক বিমানটি বিমানবন্দরে নামার পরই বাঁধন খোলা হয়। এভাবে ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর ঘটনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ভারতের পার্লামেন্টও হয়েছে উত্তপ্ত। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী সাংসদরা। এই ক্ষেভের মুখে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর জানিয়েছেন, অবৈধ অভিবাসীদের সঙ্গে যাতে কোনও দুর্ব্যবহার না করা হয়, তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ভারত সরকার আলাপ করছে।
তিনি জানান, "মার্কিন ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) সংস্থা জানিয়েছে, প্রত্যর্পণের সময় নারী ও শিশুদের আটকে রাখা হয়নি। যাত্রীদের শৌচালয়ে যাওয়াতেও কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না।"
তবে ফিরে আসা ভারতীয়রা যে কষ্ট পেয়েছেন, তা তারা জানিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জয়শংকর। ভারত সরকার এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিবিসি জানায়, মার্কিন সামরিক বিমানে ফেরত পাঠানো এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, ৪০ ঘণ্টার ফ্লাইটের পুরো সময়েই তার হাতে হাতকড়া পরানো ছিল।
ভারতে ফেরত যাওয়া এই অবৈধ অভিবাসীদের কেউ পঞ্জাবের বাসিন্দা, কেউ গুজরাটের, কেউ আবার মহারাষ্ট্রের।
পঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার হরদোরওয়াল গ্রামের বাসিন্দা জসপাল সিংহ তাদেরই এক জন। তিনি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাকে ফেরত আনার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বিবিসি-কে। কেবল অমৃতসরে নামার পরই তাকে শিকলমুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
এই অমানবিক আচরণ নিয়ে আলোচনার জন্য ভারতের পার্লামেন্টের দুই কক্ষে বিরোধীরা দাবি জানালেও তা মানা হয়নি। ফলে প্রতিবাদে দফায় দফায় লোকসভা মুলতবি হয়েছে।
বিরোধীরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের বিবৃতি দাবি করেছিলেন। তবে জয়শঙ্করের বক্তব্য ছিল, ‘‘এটি নতুন কোনও ঘটনা নয়।’’ প্রত্যেক দেশেরই অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর অধিকার আছে এবং প্রত্যেক দেশেরই অবৈধদেরকে ফেরত নেওয়া উচিত।
এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের নিজস্ব আইন রয়েছে উল্লেখ করে মূলত ট্রাম্প সরকারের হাতকড়া-শিকলেরই সাফাই দেন জয়শংকর। তবে অবৈধ অভিবাসীদের সঙ্গে যাতে কোনও দুর্ব্যবহার না করা হয়, তা নিশ্চিত করতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ভারত সরকার যোগাযোগ রেখে চলেছে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।