পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির বর্তমান জান্তা সরকার যুক্তরাষ্ট্র নয় বরং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে আগ্রহী। গত বছর অভুত্থানের মাধ্যমে নাইজারের সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখল করে।
Published : 20 Apr 2024, 10:17 PM
ইসলামপন্থি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজেদের ভূমিকার অবসান ঘটিয়ে নাইজার থেকে নিজেদের সব সেনা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির বর্তমান জান্তা সরকার যুক্তরাষ্ট্র নয় বরং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে আগ্রহী। গত বছর অভুত্থানের মাধ্যমে নাইজারের সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখল করে।
বিবিসি জানায়, শুক্রবার নাইজার থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পাশপাশি যুক্তরাষ্ট্র আগাদেজ নগরীর কাছে সাহারা মরুভূমিতে তাদের ড্রোন ঘাঁটি বন্ধ করে দিতে সম্মত হওয়ার খবরও দিয়েছে।
আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলের দেশ নাইজার জঙ্গি দল ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নতুন বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
ওই অঞ্চলে ইসলামপন্থি জঙ্গিদের কার্যকলাপের উপর নজর রাখতে এতদিন যুক্তরাষ্ট্র নাইজারকে তাদের প্রাথমিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল।
নাইজারে যুক্তরাষ্ট্রের এক হাজারের বেশি সেনা রয়েছে। তাদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়ে যাবতীয় আনুষ্ঠনিকতা সম্পন্ন করতে কয়েকদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধি দল নাইজারের রাজধানী নিয়ামিতে যাবে।
নাইজারের প্রধানমন্ত্রী আলী মাহামাম লামিনে জেইনের সঙ্গে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুর্ট ক্যাম্পবেলের বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার সেনা প্রত্যাহারের ওই ঘোষণা দেয়।
যে সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের জন্য একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, বাইডেন প্রশাসন এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।
মাত্র ছয় বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র ১০ কোটি মার্কিন ডলার খবর করে নাইজারে সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করে। যে ঘাঁটি পশ্চিম আফ্রিকায় ইসলামপন্থি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ও ফ্রান্সের কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিল।
কিন্তু গত বছর সেনাঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নাইজারে ক্ষমতার পালা বদল হলে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স উভয়ের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের অবনতি হয়। জান্তা নেতারা তাদের ছেড়ে এখন নিরাপত্তা বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা করতে চাইছে।
গত কয়েক সপ্তাহে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর কয়েক ডজন প্রশিক্ষক নাইজারে গেছেন। তারা সঙ্গে করে স্টেট-অব-দ্য-আর্ট আকাশ সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গেছেন বলেও খবর প্রকাশ পেয়েছে।
আফ্রিকার দেশগুলোর গণতন্ত্রপন্থি নেতাদের সঙ্গেও নিজেদের দূরত্ব বাড়িয়েছে নাইজার। তারা বরং বুরকিনা ফাসো ও মালির মত জান্তা নেতৃত্বাধীন দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে।
ওই তিন দেশেই গত কয়েক বছরে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে সামরিক বাহিনী। তারা পশ্চিম আফ্রিকা আঞ্চলিক পর্যদ ইকোনোমিক কমিউনিটি ফর ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোয়াস) থেকে বেরিয়ে গেছে। কারণ, অভ্যুত্থানের পর ইকোয়াস থেকে জান্তা বাহিনীকে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বলা হয়েছিল।
তারা এমনকি ফ্রান্স সমর্থিত জি৫ সাহেল ফোর্স থেকেও বেরিয়ে গেছে। বলেছে, এই বাহিনী অকার্যকর এবং আফ্রিকার সার্বভৌমত্বকে ক্ষুন্ন করে। অ্যালায়েন্স অব সাহিল স্টেটস নামে তারা তাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে।