কৃত্রিম বৃষ্টি কী কমাতে পারবে দিল্লির দূষণ?

সব অনুমতি মিললে এ মাসের শেষ নাগাদ দিল্লিতে কৃত্রিমভাবে মেঘ সৃষ্টি করে বৃষ্টি নামানো হতে পারে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2023, 11:49 AM
Updated : 14 Nov 2023, 11:49 AM

ভারতের রাজধানী দিল্লি ঢেকে গেছে ধোঁয়াশার চাদরে। ভারি বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে হাঁপিয়ে যাচ্ছে ফুসফুস। দৃশ্যমানতাও অনেক কম। আগে থেকেই চরম দূষিত দিল্লির বাতাসে সোমবার দীপাবলির উৎসবে দেদারছে পোড়ানো আতশবাজি আরো বেশি বিষ যুক্ত করেছে। এ অবস্থায় বাতাসে দূষণের মাত্রা কমিয়ে আনতে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানোর পরিকল্পনা করেছে দিল্লি সরকার।

কিন্তু দূষণ কমাতে কৃত্রিমভাবে মেঘ সৃষ্টি করে বৃষ্টি নামানোর প্রযুক্তি আসলে কতটা কার্যকর? এর মাধ্যমে বাতাসে দূষণ কামনো আসলেই কী সম্ভব?

বিবিসি জানায়, দিল্লি সরকারকে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে হলে আগে সুপ্রিম কোর্টের অনুমতির প্রয়োজন হবে। এবং সেইসঙ্গে সম্ভবত কেন্দ্রীয় কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনও প্রয়োজন পড়বে। যদি সব অনুমতি মেলে তবে এ মাসের শেষ নাগাদ দিল্লিতে কৃত্রিমভাবে মেঘ সৃষ্টি করে বৃষ্টি নামানো হতে পারে। যদিও সব কিছু সেই সময়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপরও অনেকখানি নির্ভর করবে।

বছরের পর বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরীর তালিকায় প্রথম দিকে থাকা দিল্লিতে বায়ুদূষণের সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানোর পরামর্শ কিন্তু এবারই প্রথম দেয়া হয়নি।

যদিও কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলছেন, এই প্রক্রিয়াটি জটিল এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তার উপর বায়ুদূষণের বিরুদ্ধ লড়াইয়ে এর কার্যকারিতাও প্রমাণিত নয়। দীর্ঘ মেয়াদে এটি পরিবেশের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা সেটাও গবেষণা করে দেখা প্রয়োজন।

দিল্লির বাতাস বিশেষ করে বছরের এই সময়টাতে মারাত্মক রকম দূষিত থাকে। যার পেছনে নানাবিধ কারণ রয়েছে।

দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নগরীটির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেস্ক বা একিউআই নিয়মিত ৪৫০ এর ঘর ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যা সহনীয় মাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি। একিউআই ৩০০ পেরোলেই তা ভয়াবহ মাত্রায় দূষিত এবং প্রাণীদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে ধরা হয়।

মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণের কারণে দিল্লি সরকার আগেভাগেই স্কুলে শীতকালীন ছুটি ঘোষণা করেছে। এ সময়ে নির্মাণক্ষেত্রের কাজও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা আশা করছে, সুপ্রিম কোর্ট থেকেও প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়া যাবে।

কৃত্রিম মেঘ কী?

ক্লাউড সিডিং বা কৃত্রিম মেঘ সৃষ্টি হচ্ছে এমন একটি কৌশল যা বৃষ্টি তৈরি করতে মেঘের আর্দ্রতাকে ঘনীভূত করে।

এই প্রক্রিয়ায় প্লেন থেকে বা ভূমি থেকে বিচ্ছুরণ যন্ত্রের মাধ্যমে বাতাসে সিলভার আয়োডাইড বা ক্লোরাইডের মত লবণ কণা স্প্রে করা হয়।

লবণের এই দানাগুলো আইস-নিউক্লিটিং কণা হিসেবে কাজ করে, যা মেঘের মধ্যে বরফের স্ফটিক তৈরি করে। মেঘের আর্দ্রতা এই বরফের স্ফটিকগুলিতে লেগে যায় এবং ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিতে পরিণত হয়।

যদিও এ প্রক্রিয়া সব সময় কাজ করে না। এজন্য একেবারে উপযুক্ত আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়।

বহু বছর ধরে কৃত্রিম মেঘ সৃষ্টি করে বৃষ্টি নামানোর এই প্রক্রিয়া নানা দেশে ব্যবহার হয়ে আসছে। এমন কি ভারতেও কয়েকটি রাজ্যে খরা মোকাবেলায় এভাবে বৃষ্টি নামানো হয়েছে।

Also Read: দীপাবলির পর বিষাক্ত ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন দিল্লি

Also Read: দূষিত বায়ুর চাদরে মোড়া দিল্লি, আরও অবনতির আশঙ্কা