নেটো জোটের সদস্যদেশগুলো এই জোটের কোনও একটি দেশের ওপর হামলা হলে সবাই একযোগে তা প্রতিহত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
Published : 11 Feb 2024, 05:40 PM
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর যেসব দেশ এই জোটের অংশ হিসাবে প্রতিরক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে ব্যর্থ হবে, সেসব দেশে রাশিয়াকে হামলা চালাতে ‘উৎসাহ’ দেবেন তিনি।
শনিবার সাউথ ক্যারোলাইনায় একটি জনসভায় ট্রাম্প ওই কথা বলেন। নেটো নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকের বর্ণনা দিয়ে ট্রাম্প জনসভায় বলেন, নেটোর একটি ‘বড় দেশের’ নেতা তাকে বলেছিলেন, “রাশিয়া যদি তার দেশের ওপর হামলা চালায়। তাহলে সাহায্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আসবে কি না।”
জবাবে ওই নেতাকে তিনি বলেছিলেন, “আপনি অর্থ দেননি? আপনি অপরাধী? না আমি আপনাকে রক্ষা করব না। বরং রাশিয়ার যা করতে চায় তা করতে আমি তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করব। আপনাকে অর্থ পরিশোধ করতে হবে।”
নেটো জোটের সদস্যদেশগুলো এই জোটের কোনও একটি দেশের ওপর হামলা হলে সবাই একযোগে তা প্রতিহত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্পের ওই মন্তব্যকে ‘বিস্ময়কর ও কাণ্ডজ্ঞানহীন’ বলে অভিহিত করেছে হোয়াইট হাউজ।
ট্রাম্পের মন্তব্যের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র অ্যান্ড্রু বেটস বলেছেন, “খুনি একটি শাসকগোষ্ঠীকে আমাদের ঘনিষ্ঠমিত্র দেশগুলোর ওপর আগ্রাসনকে উৎসাহ দেওয়া বিস্ময়কর এবং কাণ্ডজ্ঞাহীন- এতে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা, বিশ্বের স্থিতিশীলতা এবং দেশের অর্থনীতি বিপদগ্রস্ত হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রে এ বছরের নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে প্রার্থিতার দৌড়ে এগিয়ে আছেন ট্রাম্পই। তিনি যে সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন সে সময় থেকেই নেটো জোটের ঘোর সমালোচনা করে এসেছেন। বার বার জোটটি থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।
নেটোতে দেওয়া প্রতিরক্ষা তহবিল কমিয়েছিলেন ট্রাম্প। তার অভিযোগ ছিল, যুক্তরাষ্ট্র নেটোতে তার ভাগের চেয়ে বেশি অর্থ দিচ্ছে। ৩০ টি দেশের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের ঘাড়ে অতিরিক্ত অর্থ খরচের বোঝা নিচ্ছে।
নেটোভুক্ত দেশগুলোকে নিয়মানুযায়ী, তাদের জিডিপি-র দুই শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করতে হয়।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করেছে। এরপর থেকে নেটো বহির্ভূত দেশ ইউক্রেইনকে সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র যত অর্থ দিয়েছে তাতেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।
এবছর যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কিছু জনমত জরিপে তাকেই এগিয়ে থাকতে দেখাযাচ্ছে। তার আবার ক্ষমতায় আসার এই সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইউরোপের মিত্র দেশগুলো।
নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় এলে তিনি নেটোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি উঠিয়ে নিতে পারেন বলে আশঙ্কা আছে। যদিও নেটো মহাসচিব স্টলটেনবার্গ গতমাসে বলেছিলেন, তিনি মনে করেন না যে, দ্বিতীয়বার ট্রাম্প আসলেই নেটোতে যুক্তরাষ্ট্রের সদস্যপদ খারিজ হবে।