তবে দুই ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর চাপ বাড়াতে ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিশানা করে নাশকতা অভিযান বাড়াতে পারে রাশিয়া।
Published : 28 Nov 2024, 06:11 PM
রাশিয়ার ভূখন্ডের গভীরে দূর পাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলার জন্য ইউক্রেইনকে যুক্তরাষ্ট্র অনুমতি দেওয়ার পরও পারমাণবিক অস্ত্র হামলার ঝুঁকি বাড়েনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পাল্টা হামলার হুমকি দিলেও পারমাণবিক হামলার তেমন আশঙ্কা নেই বলেই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঁচ কর্মকর্তা।
তবে দুই ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর চাপ বাড়াতে ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিশানা করে নাশকতা অভিযান বাড়াতে পারে রাশিয়া।
গত সাত মাসে একাধিক গোয়েন্দা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইউক্রেইনের ওপর থেকে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারে বিধিনিষেধ শিথিলের যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের ফলে পারমাণবিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন সম্প্রতি ইউক্রেইনকে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালানোর যে অনুমতি দিয়েছেন, তারপরও রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গির কোনও পরিবর্তন হয়নি।
গত সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেইনকে রাশিয়ার গভীরে হামলা চালাতে এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন। এটি দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র।
মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের কার্যালয়ের এক কর্মী গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ে বলেছেন, এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের ফলেই যে রাশিয়ার পারমাণবিক নীতিতে বদল আসবে তা নয়।
রাশিয়া গত সপ্তাহে ইউক্রেইনে নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ওয়াশিংটন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য এ ছিল এক সতর্কবার্তা। কিন্তু আগে যতটা আশঙ্কা করা হয়েছিল, সেরকম কোনও প্রতিক্রিয়া রাশিয়া দেখায়নি।
রাশিয়া পারমাণবিক উত্তেজনা বাড়াবে না বলেই মনে করেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সংশ্লিষ্ট পাঁচ কর্মকর্তার একজন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় সামরিক শক্তি জাহির করতে পারে রাশিয়া। ইউক্রেইনে রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র (ওরেশনিক) হামলা চালানোটা সে চেষ্টা থেকেই করা হয়ে থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এর আগে ইউক্রেইনকে মার্কিন অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার গভীরে হামলার অনুমতি দেওয়ার বিপক্ষে ছিলেন। হোয়াইট হাউজ, প্রতিরক্ষা দপ্তর ও পররাষ্ট্রবিভাগের কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন ছিলেন যে, এমন পদক্ষেপ রাশিয়াকে উস্কে দিতে পারে এবং এর ফলে মার্কিন সামরিক ও কূটনৈতিক স্থাপনায় প্রাণঘাতী হামলা চলতে পারে।
পারমাণবিক উত্তেজনার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া নিয়েও বিশেষত উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন কয়েকজন কর্মকর্তা। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার সেনারা ইউক্রেইন যুদ্ধে যোগ দিতে রাশিয়ায় যাওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদল করেন।
কিছু মার্কিন কর্মকর্তা এখন মনে করেন, উত্তেজনা বেড়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ, বিশেষত পারমাণবিক হামলার ঝুঁকি নিয়ে একটু বেশিই চিন্তা করা হচ্ছিল।
তবে তারা এও বলছেন যে, ইউক্রেইনের সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনও বিপজ্জনক এবং পারমাণবিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়েও দেওয়া যায় না। পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে গোপনে প্রতিশোধ নেওয়ার বিকল্প উপায় খুঁজে পাওয়ার সক্ষমতা রাশিয়ার আছে, সেদিক থেকে উদ্বেগ থেকেই যায়।