ক্যারিবীয় দ্বীপে তাণ্ডব চালিয়ে হারিকেন বেরিল এখন অগ্রসর হয়েছে জ্যামাইকার দিকে। পূর্ব সতর্কতায় সেখানে কারফিউ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
Published : 03 Jul 2024, 08:31 PM
পূর্বাভাস মতোই প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে ক্যারিবীয় উপকূলে বয়ে গেছে হারিকেন বেরিল। তীব্র ঝড়ো হাওয়ার তাণ্ডবে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে অন্তত ৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। ইউনিয়ন দ্বীপের প্রায় সব বাড়িঘরই লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।
বিবিসি জানায়, ক্যারিবীয় দ্বীপে তাণ্ডব চালিয়ে হারিকেন বেরিল এখন অগ্রসর হয়েছে জ্যামাইকার দিকে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানায়, বৃহস্পতিবার জ্যামাইকা এবং কেম্যান দ্বীপের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে এই প্রাণঘাতী ঝড়।
পূর্ব-সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে জ্যামাইকা কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে স্থানীয় সময় সকাল-সন্ধ্যা কারফিউ জারি করেছে। মানুষজনকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী।
হারিকেন বেরিল এর আগে গত সোমবার প্রথম ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের গ্রানাডায় আঘাত হানে। চার ক্যাটাগরির এই ঘূণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ১৫০ মাইল। এতে গ্রানাডায় নিহত হয় তিনজন। এছাড়া, পূর্ব ক্যারিবীয় দ্বীপ সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রানাডাইনস এ ঝড়ো হাওয়া ও বন্যায় নিহত হয়েছেন একজন আর উত্তর ভেনেজুয়েলায় নিহত হয়েছে তিনজন।
ভেনেজুয়েলায় বেরিলের প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাত এবং বন্যায় মানুষের মৃত্যুসহ কয়েকজন নিখোঁজও হয়। আহত হন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট রডরিগুয়েজও।
সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রানাডাইনসের ইউনিয়ন দ্বীপ ঝড়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
স্থানীয় একজন অধিবাসী এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, “ইউনিয়ন দ্বীপের অবস্থা ভয়াবহ। প্রায় গোটা দ্বীপই গৃহহীন হয়ে পড়েছে। কোনও বাড়িঘর দাঁড়িয়ে নেই বললেই চলে। ঘরবাড়ি সব মাটিতে মিশে গেছে। রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে আছে রাস্তায়।”
আরেক অধিবাসীও একই কথা জানিয়ে বলেন, “সবকিছুই শেষ হয়ে গেছে। আমার এখন কোথাও বাস করার জায়গা নেই।”
১৯৮৫ সাল থেকে ইউনিয়ন দ্বীপে বাস করে আসছেন এমন এক অধিবাসী বলেন, ২০০৪ সালে তিনি হারিকেন ইভানের তাণ্ডব দেখেছেন। কিন্তু হারিকে বেরিল যে ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে তা অন্য পর্যায়ের। তার কথায়, এ ঝড় টর্নেডোর মতো এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। অনায়েসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে দ্বীপের ৯০ শতাংশ।”
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) এর পরিচালক মাইকেল ব্রেনান বলেন, জ্যামাইকাতেও হারিকেন বেরিল বিপর্যকর হয়ে উঠতে পারে। বাতাসের তোড়ে ঘরবাড়ি, ছাদ, গাছপালা, বিদ্যুতের লাইন এবং অবকাঠামো লন্ডভন্ড হতে পারে।