দারা থেকে সুশৃঙ্খলভাবে সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে আসাদ বাহিনী।
Published : 07 Dec 2024, 12:55 PM
ইসলামপন্থি দল হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা এক সপ্তাহের মধ্যে চতুর্থ শহর হিসেবে শনিবার দারা’র নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এর আগে আলেপ্পো, হামা ও হোমস দখল করে তারা।
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়েছিল বিদ্রোহীদের সবশেষ দখল করা দারা শহর থেকেই।
এর আগে শুক্রবার রাতে বিদ্রোহীরা দাবি করেছিল, আলেপ্পো ও হামা দখলের পর তারা হোমস নগরীর দিকে এগিয়েছে।
তার পরপরই হোমস এবং পাশের দারা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিল বিদ্রোহীরা।
রয়টার্স লিখেছে, দারা থেকে সুশৃঙ্খলভাবে সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে আসাদ বাহিনী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, শহরের প্রধান চত্বরে ফাঁকা গুলি ছুড়ে দারা দখল উদযাপন করছে বিদ্রোহীরা।
তবে সামরিক বাহিনী বা আসাদ সরকারের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনোও মন্তব্য জানতে পারেনি রয়টার্স। বার্তা সংস্থাটি লিখেছে, তারা বিদ্রোহীদের দাবির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
১৩ বছর আগে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে দারা'র জনসংখ্যা ছিল এক লাখেরও বেশি। জর্ডানের সীমান্তবর্তী এই শহরে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ মানুষের বসবাস।
আলেপ্পো ও হামার চেয়ে কৌশলগত দিক থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নগরী হচ্ছে হোমস। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক এবং পশ্চিমাঞ্চলের আসাদপন্থি এলাকাগুলোর সংযোগ স্থাপনের কেন্দ্রবিন্দু এই নগরী।
রয়টার্স লিখেছে, বিদ্রোহীদের এই অগ্রযাত্রায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এবং তার একনিষ্ঠ সমর্থক রাশিয়া ও ইরানের জন্য ঝুঁকি বেড়েছে।
সিরিয়ার বিদ্রোহীদের লক্ষ্য এখন দামেস্ক আর আসাদ
গত ২৭ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া অভিযানে বিদ্রোহীরা উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলের আলেপ্পো ও হামা দখল করে নেয়।
সিরিয়ার কুর্দি বাহিনী বলেছে, ২০১৭ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে পরাজয়ের আগে কঠোর শাসনের অধীনে সামরিক আইন জারি করা জিহাদি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট পূর্ব সিরিয়ার কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
সিরিয়ায় রুশ কোঅর্ডিনেশন সেন্টারের বরাত দিয়ে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার হামা, ইদলিব ও আলেপ্পোর বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে রুশ-সিরিয়ার বিমান হামলায় অন্তত ২০০ বিদ্রোহী নিহত হয়েছে।
সিরিয়ার সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, হোমস ও এর আশপাশে সরকারি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
বিদ্রোহীদের আগ্রাসনের মধ্যেই শুক্রবার রাশিয়া ও জর্ডান তাদের নাগরিকদের সিরিয়া ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর ২০২২ সালে জানিয়েছে, সিরিয়ায় ২০১১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৩ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।