ইরানগামী মালবাহী জাহাজে `হামলা চালিয়েছে হুতিরা’

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাহাজটি লক্ষ্য করে দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, এতে জলযানটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ হতাহত হয়নি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2024, 08:17 AM
Updated : 13 Feb 2024, 08:17 AM

মার্কিন সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতিরা এবার ইরানগামী একটি মালবাহী জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

ওই কর্মকর্তারা জানান, সোমবার ভোরে লোহিত সাগরে হামলার এ ঘটনা ঘটেছে। জাহাজটি লক্ষ্য করে দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, এতে জলযানটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ হতাহত হয়নি।

জাহাজ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক জলপথ ধরে চলাচলরত জাহাজগুলোতে হামলা শুরু করার পর থেকে সম্ভবত এই প্রথমবারের মতো মিত্র ইরানের পথে থাকা একটি জলযানে হামলা চালালো হুতিরা।

গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে হুতিরা লোহিত সাগর ও সংলগ্ন জলপথ ধরে যাওয়া বিভিন্ন জাহাজে হামলা চালাচ্ছে। হুতিরা জানিয়েছে, তারা শুধু ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত ও ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়া দেশগুলোর জাহাজকে লক্ষ্যস্থল করছে।   

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) সামাজিক মাধ্যম এক্স প্ল্যাটফর্মে বলেছে, “ইরান সমর্থিত হুতিরা তাদের নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের এলাকাগুলো থেকে বাব আল-মানদেব প্রণালীর দিকে দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। উভয় ক্ষেপণাস্ত্রই এমভি স্টার আইরিসকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। জাহাজটি গ্রিসের মালিকানাধীন, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পতাকাবাহী একটি মালবাহী জাহাজ, এটি ব্রাজিল থেকে ভুট্টা নিয়ে লোহিত সাগর পার হচ্ছিল।” 

একই প্ল্যাটফর্মে সেন্টকমের কর্মকর্তারা বলেছেন, “জাহাজটি জানিয়েছে, সামান্য ক্ষতি সত্ত্বেও তারা চলাচলের উপযোগী আছে এবং তাদের কোনো ক্রু আহত হয়নি। উল্লেখ্য, এমভি স্টার আইরিসের গন্তব্য ইরানের ইমাম খোমেনি বন্দর।”

রয়টার্স জানিয়েছে, হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, জাহাজটি আমেরিকানদের। কিন্তু সাগরে চলাচলরত জাহাজগুলোকে অনুসরণ করা শিপিং ট্র্যাকাররা বলেছে, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পতাকাবাহী জাহাজটি গ্রিসের মালিকানাধীন।

তথ্য থেকে জাহাজ চলাচলের পথ বিশ্লেষণ করা ও বিশ্লেষক গোষ্ঠী কেপলার এবং সেন্টকমের তথ্য অনুযায়ী, স্টার আইরিস ব্রাজিল থেকে ভুট্টা নিয়ে ইরানে যাচ্ছিল।

কেপলারের কৃষিপণ্য বিষয়ক নেতৃস্থানীয় বিশ্লেষক ইশান বানু বলেন, “ইরানগামী প্রতিটি মালবাহী জাহাজের মতোই স্টার আইরিসও লোহিত সাগর এড়ায়নি, সম্ভবত জাহাজের গন্তব্য বিবেচনায় ইরান সমর্থিত হুতিরা তাদের ‘বন্ধু’ বলে বিবেচনা করতে পারে ভেবে হামলার আশঙ্কা করেনি।” 

মধ্যপ্রাচ্যের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘ইরান হুতিদের নিয়ন্ত্রণ করছে না আর তারা স্বাধীনভাবে কাজ করছে’ এমনটি তুলে ধরতে এই হামলাটি চালানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে তাদের। তাদের সন্দেহ, হুতিরা হয়তো ইরানকে আগেভাগেই এ হামলা চালানো হবে বলে জানিয়ে রেখেছিল।