পূর্বাভাস বলছে, ওই দিন আবহাওয়া এসএলএস রকেট উৎক্ষেপণের অনুকূলে থাকার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ।
Published : 31 Aug 2022, 03:33 PM
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উৎক্ষেপণ বাতিল করার পর আর্টেমিস ওয়ান মহাকাশে পাঠানোর নতুন দিন তারিখ ঘোষণা করেছে নাসা। তবে নতুন তারিখে আবহাওয়া আদৌ এসএলএস রকেট উৎক্ষেপণের অনুকূলে থাকবে কি না, সে প্রশ্নের উত্তরে আছে বড় অনিশ্চয়তা।
২৯ সেপ্টেম্বর চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রার কথা ছিল আর্টেমিস ওয়ান মিশনের এসএলএস রকেটের। তবে রকেটের জ্বালানীর ট্যাংকের সংযোগ স্থলে ফাঁটল এবং একটি ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নির্ধারিত সময়ের ৪০ মিনিট আগে উৎক্ষেপণ কার্যক্রম থামিয়ে দেয় নাসা।
রকেট উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে এমন কারিগরি ত্রুটির আশঙ্কায় আগে থেকেই বিকল্প উৎক্ষেপণ দিন হিসেবে ২ ও ৫ সেপ্টেম্বরের কথা জানিয়ে রেখেছিল নাসা। তবে, সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর, শনিবার আর্টেমিস ওয়ান উৎক্ষেপণের নতুন দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি।
অন্যদিকে, শনিবারেও আর্টেমিস ওয়ানের সফল উৎক্ষেপণের সম্ভাবনা প্রশ্নবিদ্ধ বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, ওই দিন আবহাওয়া এসএলএস রকেট উৎক্ষেপণের অনুকূলে থাকার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ। অন্যদিকে, এখনও কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির সমাধান বাকি থাকার কথা জানিয়েছে নাসা।
অনিশ্চয়তা থাকলেও এসএলএস রকেট এবং ওরিয়ন স্পেসক্র্যাফটকে কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চপ্যাডেই রেখেছে নাসা। আবাহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং নতুন কোনো ত্রুটি দেখা না দিলে শনিবার দুপুরের পর কোনো এক সময়ে মহাকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে আর্টেমিস ওয়ান। ছয় সপ্তাহের মিশনে চাঁদকে ঘিরে চক্কর দিয়ে পৃথিবীতে ফিরবে ওরিয়ন।
চাঁদে শেষবার কোনো মানুষের পদচিহ্ন পড়েছিল ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসে। আর্টেমিস প্রকল্পের মাধ্যমে চাঁদে আবার মানব নভোচারীদের ফেরাতে চাইছে নাসা। সে লক্ষ্যে নতুন রকেট এবং স্পেসক্রাফটের কার্যক্ষমতা যাচাই করে দেখার মিশন হচ্ছে আর্টেমিস ওয়ান।
মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে নাসা জানিয়েছে, সোমবারের যান্ত্রিক ত্রুটির দায় সম্ভবত রকেটের ইঞ্জিনের একটি সেন্সরের। পরিকল্পনা অনুযায়ী উৎক্ষেপণের প্রায় ৩০ মিনিট আগেই ইঞ্জিনের তাপমাত্রা কমিয়ে আনার চেষ্টা করার কথা ছিল নাসার প্রকৌশলীদের। কিন্তু ত্রুটির কারণে চেষ্টা করেও অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। পুরো ব্যাখ্যা জানতে প্রকৌশলীদের ত্রুটিযুক্ত সেন্সরের সকল ডেটা বিশ্লেষণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন আর্টেমিস ওয়ানের লঞ্চ ডিরেক্টর বা উৎক্ষেপণ পরিচালক চার্লি ব্ল্যাকওয়েল-থম্পসন।
সেন্সরটি যেভাবে আচরণ করছে, তা সার্বিক পরিস্থিতির পদার্থবিদ্যার যুক্তির সঙ্গে মেলে না বলে মন্তব্য করেছেন নাসার এসএলএস প্রকল্পের পরিচালক জন হানিকাট। সেন্সরটি কয়েক মাস আগে এসএলএস রকেটের নির্মাণ কারখানায় শেষবার পরীক্ষা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। পুরো সেন্সর পাল্টাতে চাইলে রকেট আবার কারখানায় ফেরত নিতে হবে এবং এতে পুরো মিশন কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন হানিকাট।
রয়টার্স জানিয়েছে, আর্টেমিস ওয়ান মিশনের মাধ্যমে কার্যত এসএলএস রকেট এবং ওরিয়ন স্পেসক্র্যাফটের নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করে দেখতে চাইছে নাসা। আর্টেমিস ওয়ান মিশন সফল হলে, ভবিষ্যতে চন্দ্রাভিযাত্রীদের বহনের সবুজসংকেত পাবে নাসার নতুন রকেট ও স্পেসক্রাফট জুটি।
২০২৫ সালেই নভোচারীদের চাঁদে ফেরাতে চায় চায় নাসা। তবে নাসার এ পরিকল্পনা আরও কয়েক বছর পিছিয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কাও আছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।