মামলাটি নিষ্পত্তির ঘোষণা আসার পরপরই কোম্পানিটি নিজস্ব বিধিমালায় আপডেট এনে পরিষ্কার করেছে, তারা এখনও ব্যবহারকারীর ডেটা ট্র্যাকিং অব্যাহত রেখেছে।
Published : 02 Apr 2024, 07:36 PM
গুগলের সেবা ব্যবহারের ফলে ব্যবহারকারীর অজান্তে জমা হওয়া শত শত কোটি তথ্য মুছে ফেলতে হবে গুগলকে। পাশাপাশি একজন ব্যবহারকারীকে কতটা ট্র্যাক করতে পারবে এ সার্চ জায়ান্ট, সেখানেও জারি হচ্ছে বিধিনিষেধ।
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে দায়ের করা একটি ক্লাস অ্যাকশন মামলার ফলাফল হিসেবে এ নিষ্পত্তি এল, যেখানে সার্চ জায়ান্ট কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ব্যবহারকারীরা ‘প্রাইভেট মোডে’ ওয়েব ব্রাউজিং করার সময়ও গুগল তাদের তথ্য সংগ্রহ করেছে, এবং এতে তাদের প্রাইভেসি লঙ্ঘিত হয়েছে।
এ মামলার ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচশ কোটি ডলার দাবি করেছিল বাদীপক্ষ।
গুগল এ নিষ্পত্তিতে সমর্থন জানালেও তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছে।
মামলার প্রতিক্রিয়ায় এরইমধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে কোম্পানিটি।
বিবিসি বলছে, এই ডেটা মোছার প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও প্রযোজ্য হবে।
জানুয়ারিতে উভয় পক্ষ থেকে মামলাটি নিষ্পত্তির ঘোষণা আসার পরপরই কোম্পানিটি নিজস্ব বিধিমালায় আপডেট এনে পরিষ্কার করেছে, তারা এখনও ব্যবহারকারীর ডেটা ট্র্যাকিং অব্যাহত রেখেছে, এমনকি যখন কোনও ব্যবহারকারী প্রাইভেট মোড বা ‘ইনকগনিটো’ সেটিংয়ে সার্চ করার অপশন বেছে নেন।
ওই মোডে ব্যবহারকারীর প্রাইভেসির বেলায় কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায় কারণ এতে তার ব্রাউজিং কার্যকলাপ সংরক্ষণ করা হয় না।
একই মাসে কোম্পানিটি বলেছিল, তারা নতুন একটি ফিচার নিয়ে পরীক্ষা শুরু করছে। এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বিভিন্ন থার্ড-পার্টি কুকি ব্লক হয়ে যাবে, যা সাধারণত সকল ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহারকারীদের কার্যকলাপ ট্র্যাক করার ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে।
২০২০ সালে মামলা দায়ের করার পরপরই ইনকগনিটো মোড ব্যবহারকারীদের জন্য থার্ড পার্টি কুকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্লক করার ব্যবস্থা চালু করে গুগল। সোমবার স্যান ফ্রানসিসকো’র ফেডারেল আদালতে জমা দেওয়া নিষ্পত্তি নথির তথ্য অনুসারে, অন্তত পাঁচ বছর এ নিষেধাজ্ঞা সক্রিয় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কোম্পানিটি।
সোমবার আদালতে জমা দেওয়া নথিতে আরও বলা হয়, নিজেদের সংগ্রহ করা ‘শত শত কোটি’ প্রাইভেট ব্রাউজিং ডেটার রেকর্ডও মুছে ফেলতে রাজি হয়েছে গুগল।
“আমরা এ মামলা নিষ্পত্তি করতে পেরে খুবই আনন্দিত। তবে, এটি আমাদের কাছে সবসময়ই ভিত্তিহীন মনে হয়েছে, ” এক বিবৃতিতে বলেন গুগল মুখপাত্র জর্জ কাস্তানেডা। তিনি আরও যোগ করেন, এর জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ দেবে না কোম্পানিটি।
“আমরা বিভিন্ন এমন পুরোনো টেকনিকাল ডেটা মুছে ফেলতে পেরে আনন্দিত, যেগুলো কখনওই নির্দিষ্ট কারও সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না ও কোনও ধরনের পার্সোনালাইজেশনের ক্ষেত্রেও কখনও ব্যবহার করা হয়নি।”
প্রাইভেসি লঙ্ঘনের দায়ে এখনও বেশ কিছু মামলা রয়েছে গুগলের বিরুদ্ধে, যার জন্য আর্থিক জরিমানাও গোনা লাগতে পারে কোম্পানিটির।
যুক্তরাষ্ট্রে, গুগল ও এর মালিক কোম্পানি অ্যালফাবেট দুটি ভিন্ন অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার মুখে পড়েছে, যেগুলো দায়ের করেছে দেশটির ফেডারেল সরকার।
সম্প্রতি, অন্যান্য বেশ কিছু মামলাও নিষ্পত্তি করেছে গুগল।
২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে দায়ের করা এক মামলা নিষ্পত্তিতে প্রায় ৪০ কোটি ডলার জরিমানা দিয়েছিল কোম্পানিটি। এতে অভিযোগ তোলা হয়, ব্যবহারকারীদের ডিভাইসে থাকা বিভিন্ন পরিষেবা থেকে তাদের লোকেশন ট্র্যাক করত গুগল।