এআই নিয়ন্ত্রণে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালির

“আমাদের এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশনে নিয়ন্ত্রণ আনা দরকার, তবে প্রযুক্তির ওপর নয়। আর এটি আমাদের বৈশ্বিকভাবে এআই খাতের শীর্ষ পর্যায়ে রাখার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।”

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2023, 11:03 AM
Updated : 20 Nov 2023, 11:03 AM

কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, তা নিয়ে চুক্তি করেছে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালি।

এই চুক্তির মাধ্যমে এআই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইউরোপে আলোচনা ত্বরান্বিত হবে বলে উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

চুক্তি অনুযায়ী, এই তিন দেশের সরকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে প্রচলিত সেইসব ভিত্তি মডেলকে ‘স্বনিয়ন্ত্রিত আচরণবিধির মধ্যে আনতে’ সমর্থন জানিয়েছে, যেগুলো থেকে বিভিন্ন ধরনের আউটপুট তৈরি করা যায়। তবে, তারা ‘বিভিন্ন অপরীক্ষিত নিয়মের’ বিরোধিতা করছে।

“আমরা একইসঙ্গে জোর দিয়ে বলছি, ‘এআই অ্যাক্ট’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে নিয়ন্ত্রণ আনার কাজ করলেও এ ধরনের প্রযুক্তির বেলায় তা ঘটবে না।” --উল্লেখ রয়েছে ওই নথিতে। 

“বিভিন্ন এআই ব্যবস্থার মধ্যে ঝুঁকি থাকলেও প্রযুক্তির বেলায় বিষয়টি এমন নয়।”

এ বিষয়ে নিজস্ব অবস্থান নিয়ে আলোচনা করছে ইউরোপীয় কমিশন, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট, ও ইইউ কাউন্সিল।

চুক্তি অনুসারে, এআইয়ের ভিত্তি মডেল নির্মাতাদেরকে ‘মডেল কার্ডের’ সংজ্ঞা দিতে হবে, যা ‘মেশিন লার্নিং মডেল’ বিষয়ক তথ্য প্রদানে ব্যবহার করা হয়।

“মডেল কার্ডের কার্যবিধি, সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা বোঝার ক্ষেত্রেও প্রাসঙ্গিক তথ্য দিতে হবে। আর নির্মাতাদের কমিউনিটির মধ্যে প্রচলিত সেরা অনুশীলনগুলোর ওপর ভিত্তি করে এটি নির্ধারণ করা হবে।” --উল্লেখ রয়েছে গবেষণাপত্রে।

“এমন নির্দেশিকা তৈরি ও মডেল কার্ডের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে একটি এআই নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা।”

প্রাথমিকভাবে কোনো নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা হবে না এতে। তবে, নির্দিষ্ট সময় পর কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা শনাক্ত হলে তার ভিত্তিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যেতে পারে।

এ বিষয় নিয়ে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করা জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয় ও ডিজিটাল মন্ত্রণালয় বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ও আইনি ব্যবস্থায় এআই প্রযুক্তিকে নয়, বরং এর বিভিন্ন প্রয়োগের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনা উচিৎ।

দেশটির ডিজিটাল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী ভলকার উইসিং রয়টার্সকে বলেন, এআইয়ের ব্যবহার সীমিত করা নিয়ে ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার বিষয়ে তিনি ‘খুবই সন্তুষ্ট’।

“আমাদের এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশনে নিয়ন্ত্রণ আনা দরকার, তবে প্রযুক্তির ওপর নয়। আর এটি আমাদের বৈশ্বিকভাবে এআই খাতের শীর্ষ পর্যায়ে রাখার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।” --বলেন উইসিং।

জার্মানির ‘স্টেট সেক্রেটারি ফর ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ফ্রাঞ্জিস্কা ব্রান্টনার রয়টার্সকে বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন সুযোগ কাজে লাগানোর পাশাপাশি এর ঝুঁকিগুলো কমিয়ে আনাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

“আমরা যে প্রস্তাবনা বানিয়েছি, তা বিভিন্ন এমন প্রযুক্তিগত ও আইনি বিষয়ের মধ্যে ভারসাম্য তৈরির লক্ষ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেগুলো এখনও সংজ্ঞায়িত করা হয়নি”, – বলেন ব্রান্টনার।  

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রাষ্ট্র এআইয়ের বিভিন্ন অর্থনৈতিক সুবিধা লুফে নিতে চাওয়ার মধ্যেই নভেম্বরে নিজেদের প্রথম এআই সম্মেলন আয়োজন করেছে যুক্তরাজ্য।

সোমবার ও মঙ্গলবার থুরিংগিয়া অঙ্গরাজ্যের জেনা শহরে একটি ডিজিটাল সম্মেলন আয়োজন করছে জার্মান সরকার, যেখানে যোগ দিতে পারেন রাজনীতি, ব্যবসা ও বিজ্ঞান খাতের বিভিন্ন প্রতিনিধি।

এ ছাড়া, বুধবার জার্মান ও ইতালীয় সরকারের মধ্যে হতে যাওয়া বৈঠকে এআই সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিও আলোচ্যসূচিতে থাকবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।