‘রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা’ লঙ্ঘনের অভিযোগে বাইন্যান্স, তদন্ত

“একতরফাভাবে ক্রিপ্টোমুদ্রায় মানুষের প্রবেশাধিকার বন্ধ করলে তা ‘ক্রিপ্টোর মূলনীতির বিরুদ্ধে যাবে’। আর এটি সাধারণ ব্যবহারকারীদের ওপরও প্রভাব ফেলবে।”

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2023, 09:36 AM
Updated : 7 May 2023, 09:36 AM

মার্কিন বিচার বিভাগের আরেকটি তদন্তের মুখে পড়তে পারে ক্রিপ্টো জায়ান্ট বাইন্যান্স। এবারে তদন্তের বিষয়, রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ‘সম্ভাব্য’ লঙ্ঘন।

শীর্ষ এই ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ রাশিয়ার গ্রাহকদের জন্য দেশটির আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ফাঁকি দিয়ে লেনদেনের সুযোগ দিয়েছে কি না, তা যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ খতিয়ে দেখছে বলে উঠে এসেছে মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে।

পাশাপাশি, ইরানের বিরুদ্ধে আরোপ করা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে বাইন্যান্স অর্থ স্থানান্তর করেছে, আগের এমন অভিযোগ নিষ্পত্তির সম্ভাবনা নিয়ে বিচার বিভাগের আলোচনার কথাও জানিয়েছে সংবাদ সংস্থাটির বিভিন্ন সূত্র।

এর আগে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের পর দেশটির আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

ইউক্রেইনের উপ-প্রধানমন্ত্রী মিখাইলো ফেদেরভ বিভিন্ন ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জকে একই সময় রাশিয়া ও বেলারুশের অ্যাকাউন্টগুলোর কার্যক্রম আটকে দেওয়ার আহ্বান জানালেও, তা নাকচ করা কোম্পানিগুলোর একটি ছিল বাইন্যান্স।

সে সময় কোম্পানির মুখপাত্র বলেন, একতরফাভাবে ক্রিপ্টোমুদ্রায় মানুষের প্রবেশাধিকার বন্ধ করলে তা ‘ক্রিপ্টোর অস্তিত্ব থাকার কারণের বিরুদ্ধে যাবে’। আর এটি কেবল রাশিয়ার ধনকুবেরদেরই নয়, সাধারণ ব্যবহারকারীদের ওপরও প্রভাব ফেলবে।

বিচার বিভাগ সত্যিই বাইন্যান্সের রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে নজর দিলে, তা নিছক এক্সচেঞ্জটির বিরুদ্ধে পরিচালিত বিভিন্ন তদন্তের একটি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও ফেডারেল রাজস্ব সংস্থা এমন সব অভিযোগ খতিয়ে দেখছে, যেখানে ২০২১ সালে একাধিক অর্থ পাচার পরিকল্পনায় বাইন্যান্সকে ব্যবহারের কথা উল্লেখ রয়েছে।

আর এই বছরের শুরুতেই বাইন্যান্স ও এর প্রতিষ্ঠাতা চ্যাংপেং ঝাও’র বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর পরিচয় যাচাই করতে না বলার, অনিবন্ধিত ক্রিপ্টো লেনদেনের ও মার্কিন নীতিমালা এড়ানোর ব্যবস্থা বাস্তবায়নের অভিযোগ তোলে মার্কিন সরকারী সংস্থা ‘কমোডিটি ফিউচারস ট্রেডিং কমিশন (সিএফটিসি)’। সে সময় বাইন্যান্স এনগ্যাজেটকে বলেছে, তাদের কাছে এমন অভিযোগ ‘অপ্রত্যাশিত ও হতাশাজনক’ মনে হয়েছে।

“২০২১ সালে নিজেদের কর্পোরেট প্রশাসনিক অবকাঠামো নতুন করে ঢেলে সাজানোর এক উদ্যোগ শুরু করে বাইন্যান্স। এর মধ্যে ছিল বিশ্বব্যাপী বাইন্যান্সের পরিচালনা ব্যবস্থা মৌলিকভাবে পরিবর্তনের লক্ষ্যে একদল বিশ্বমানের দক্ষ নির্বাহী নিয়োগের বিষয়টিও।” --সম্প্রতি ব্লুমবার্গকে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন বাইন্যান্সের মুখপাত্র।

তিনি আরও যোগ করেন, এখন বিভিন্ন প্রচলিত ব্যাংকের মতোই কোম্পানিটি ‘নিজেদের গ্রাহক চেনা’ সংশ্লিষ্ট প্রোটোকলগুলো কঠোরভাবে পরিচালনা করে।

“আমারা দ্বৈত নিবন্ধন, বেনামী পরিচয় ও অর্থের বিভিন্ন অস্পষ্ট উৎসের বেলায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বণ করে থাকি।” --বলেছে বাইন্যান্স। 

এনগ্যাজেট বলছে, বাইন্যান্স কোনো অভিযোগের কথা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ না করলেও এই বিবৃতি থেকে ইঙ্গিত মেলে, তারা নিজেদের বিরুদ্ধে আনা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রাশিয়ার ব্যবহারকারীদের সেবা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগটি অস্বীকার করছে।