এর আগে হলিউডের নারী নিপীড়ক হার্ভি ওয়াইনস্টাইনের পক্ষে গোপন প্রচারণা চালিয়ে আলোচনায় আসে ব্ল্যাক কিউব।
Published : 13 Nov 2023, 04:21 PM
হাঙ্গেরির গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে লিংকডইন ব্যবহার করে দেশটির অধিকার কর্মী ও সংবাদিকদের লক্ষ্য করে বেসরকারি এক গোয়েন্দা সংস্থা গোপন ভিডিও প্রচারণা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত সংস্থাটি ইসরায়েলের বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ব্ল্যাক কিউব বলে জানিয়েছে পেশাভিত্তিক সামাজিক মাধ্যমটি।
লিংকডইনে কল্পিত ব্যবহারকারীদের একটি ভুয়া নেটওয়ার্ক তৈরি করে সেখানে চাকরির বানোয়াট বিজ্ঞাপন দিয়ে ইসরায়েলভিত্তিক ব্ল্যাক কিউব অধিকার কর্মী ও সংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলে উল্লেখ করেছেন মাইক্রোসফট মালিকানাধীন লিংকডইনের একজন গবেষক।
“এর পর ওইসব ব্যক্তিদের মাধ্যমে ফুটেজগুলোকে হাঙ্গেরির বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার মানহানিতে ব্যবহার করে” বলে ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে অনুষ্ঠিত ‘সাইবারওয়ারকন’ সম্মেলনে বলেছেন মোনা ডামিয়ান।
ডামিয়ান বলেন, ব্ল্যাক কিউব পরিচালিত অ্যাকাউন্টগুলোকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি “ব্যাপক অপব্যবহার এবং সেবা নীতিমালা লঙ্ঘনের” দায়ে ব্ল্যাক কিউবের কোম্পানির পেইজকেও সরিয়ে দিয়েছে লিংকডইন।
এর আগে হলিউডের নারী নিপীড়ক হার্ভি ওয়াইনস্টাইনের পক্ষে গোপন প্রচারণা চালিয়ে আলোচনায় আসে ব্ল্যাক কিউব। সাম্প্রতিক অভিযোগের পরপরই এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, তারা কেবল “আইনি পরামর্শ মাফিক” মামলা সংক্রান্ত বিষয় এবং “অর্থিক কেলেংকারি” নিয়েই কাজ করে।
সাইবার জগতের সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকার কথা অস্বীকার করেছে কোম্পানিটি।
তবে হাঙ্গেরিতে কোম্পানিটি কাদের পক্ষে কাজ করছিল সে ব্যাপারে কিছু বলেনি লিংকডইন। সেইসঙ্গে কতগুলো ভুয়া অ্যাকাউন্ট সরানো হয়েছে সে ব্যাপারেও প্ল্যাটফর্মটি কোনো তথ্য দেয়নি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স। হাঙ্গেরি সরকারের মুখপাত্রের কাছে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনিও কোনো জবাব দেননি।
এর আগে ব্ল্যাক কিউব গোপনে হাংগেরিভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভিডিও ধারণ করে সেগুলোকে ডানপন্থী সংবাদমাধ্যমগুলোয় প্রচার করে দেশটির ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল পলিটিকো।
ব্ল্যাক কিউবের এবারের অপারেশনটি ২০২০ সালে শুরু হয় এবং হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবানকে সমালোচনা করেন এমন অন্তত ১২ জন অধিকারকর্মী ও সাংবাদিক এর লক্ষ্যবস্তু ছিলেন। ভিডিও কলে তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথোপকথন চালিয়ে সেগুলোকে গোপনে ধারণ করে পরবর্তীতে ২০২২ সালের এপ্রিলের আগে দেশটির সরকারপন্থী গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়।
সে নির্বাচনে বড় আকারের জয় লাভ করেন ওরবান, যার সরকার উন্নয়ন সংস্থা এবং সাংবাদিকদেরকে বিদেশী চর বলে নিয়মিত অভিযোগ করে।
এই গোপন ক্যামেরা অভিযানের একজন ভুক্তভোগী হাঙ্গেরি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক পরিচালক ওরসলিয়া জেনি বলেন, নির্বাচনের আগে ফুটেজগুলো ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে।
“দুই সপ্তাহজুড়ে সেগুলো হাঙ্গেরির গণমাধ্যমে ব্যাপক হারে ছড়িয়েছে” তিনি রয়টার্সকে বলেন।
“সেগুলো সোজাসাপ্টা প্রোপাগান্ডা ছড়াতে ব্যবহার করা হয়েছে।”