এই গবেষণায় মাত্র ২০টি পুরোনো কম্পিউটার মাদারবোর্ড থেকে সাড়ে চারশ মিলিগ্রামের ২২ ক্যারেট স্বর্ণ পুনরুদ্ধার করেছেন বিজ্ঞানীরা, যেগুলো দেখতে চিকেন নাগেটের মতো।
Published : 05 Mar 2024, 03:50 PM
বিজ্ঞানীরা এমন এক কার্যকর পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, যার মাধ্যমে ইলেকট্রনিক বর্জ্য থেকে স্বর্ণ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
গবেষকদের দাবি, এর মাধ্যমে মাত্র এক ডলার খরচ করে ৫০ ডলার পর্যন্ত স্বর্ণ উদ্ধার করা যাবে।
ইলেকট্রনিক বর্জ্য থেকে দামী এ ধাতু পুনরুদ্ধারে এই গবেষণায় পনির তৈরির প্রক্রিয়ার উপজাত অর্থাৎ ‘প্রোটিন স্পঞ্জ’ ব্যবহার করা হয়। গবেষকদের দাবি, এই পদ্ধতি টেকসই হওয়ার পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও ব্যবহারযোগ্য।
এই গবেষণায় মাত্র ২০টি পুরোনো কম্পিউটার মাদারবোর্ড থেকে সাড়ে চারশ মিলিগ্রামের ২২ ক্যারেট স্বর্ণ পুনরুদ্ধার করেছেন বিজ্ঞানীরা, যেগুলো দেখতে চিকেন নাগেটের মতো।
এ অনুসন্ধান থেকে ইঙ্গিত মেলে, বিভিন্ন সোর্স ম্যাটিরিয়াল সংগ্রহ ও সমগ্র প্রক্রিয়ার বিদ্যুৎ খরচ স্বর্ণের বাজারমূল্যের ৫০ ভাগের এক ভাগ মাত্র।
বর্জ্য থেকে স্বর্ণ আহরণের জন্য বিজ্ঞানীরা উচ্চ তাপমাত্রায় অ্যাসিডিক অবস্থায় থাকা হুই প্রোটিন গলিয়ে প্রোটিনের একটি ঘন ব্যাটার তৈরি করেন, যা শুকিয়ে তারা একে স্পঞ্জে রূপান্তর করেছেন।
এরপর ২০টি মাদারবোর্ডের ধাতুর টুকরা সরিয়ে একে অ্যাসিডের মধ্যে ডোবান গবেষকরা। এর পর সেগুলোর মধ্যে থাকা স্বর্ণের আয়ন আকৃষ্ট করাতে সেগুলোকে তারা প্রোটিন ফাইবার স্পঞ্জে স্থাপন করেন।
এ ফাইবার অন্যান্য ধাতব আয়নকে আকৃষ্ট করতে পারলেও স্বর্ণের আয়নের বেলায় তা আরও বেশি কার্যকর বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
ওই স্পঞ্জ গরম করে স্বর্ণের আয়নকে একটি পরতে রূপান্তর করেন বিজ্ঞানীরা, যেগুলোকে গলিয়ে পরবর্তীতে একটি স্বর্ণের নাগেট তৈরি করা হয়। এ প্রক্রিয়ার বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘অ্যাডভান্সড ম্যাটিরিয়ালস’-এ।
গবেষণার তথ্য অনুসারে, সেইসব নাগেটে স্বর্ণের মাত্রা ছিল ৯১ শতাংশ। আর বাকি অংশে ছিল কপার, যার ফলে এর মান দাঁড়ায় প্রায় ২২ ক্যারেট।
“এ পদ্ধতিতে আমার যে বিষয়টি সবচেয়ে ভালো লেগেছে, তা হল, আমরা ইলেকট্রনিক বর্জ্য থেকে স্বর্ণ পুনরুদ্ধারে খাবারের উপজাত ব্যবহার করেছি। আপনি এর চেয়ে আর টেকসই উপায় খুঁজে পাবেন না,”এক বিবৃতিতে বলেন এই গবেষণার সহ-লেখক ও ইটিএইচ জুরিখের অধ্যাপক রাফায়েল মেজেঙ্গা।