চীনের নিখোঁজ শীর্ষ প্রযুক্তি ব্যাংকার সরকারের হাতে বন্দি

চীনের শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে চুক্তির মধ্যস্থতাকারী হিসাবে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ ব্যক্তি বাও ফান। গত ফেব্রুয়ারি মাসে হঠাৎ করেই তিনি নিখোঁজ হয়ে যান।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2023, 06:21 AM
Updated : 8 June 2023, 06:21 AM

কয়েকমাস আগে নিখোঁজ হওয়া চীনের শীর্ষ প্রযুক্তি ব্যাংকারের খোঁজ মিলল। দেশটির সরকারি বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন তিনি। আরও কয়েক মাস থাকবেন সেখানেই।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, দেশটির কেন্দ্রীয় দুর্নীতি দমন সংস্থার হাজতে রয়েছেন শীর্ষ ব্যাংকার বাও ফান। গত ফেব্রুয়ারি মাসে হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যান ‘চায়না রেনেসাঁ’র এই প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও।

পুঁজিবাজার বিষয়ক প্রকাশনা ‘ইকোনমিক অবজারভারে’র প্রতিবেদন বলছে, হংকংয়ে নিবন্ধিত ‘চায়না রেনেসাঁ’র প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও বাও ফানকে গত সাত ফেব্রুয়ারি উঠিয়ে নিয়ে যায় চীনের কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা রক্ষা কমিশন (সিসিডিআই)। তার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অবৈধ কর্পোরেট লেনদেনের কথা বলছে সিসিডিআই।

গোপন সূত্রের বারাত দিয়ে পত্রিকাটি বলেছে গত সাত মে এই আটকাদেশ আরও তিন মাসের জন্য বাড়িয়েছে আটককারী সংস্থাটি।

বাওয়ের রহস্যজনক নিখোঁজ পুঁজিবাজার এবং চীনের প্রযুক্তি খাতে শীতল আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সিএনএন। 

প্রতিষ্ঠাতা গায়েব হয়ে যাওয়ার পর চায়না রেনেসাঁ’র শেয়ার মূল্য ২০ শতাংশেরও বেশি কমে যায় ও এক পর্যায়ে পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাওয়ের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব না হওয়ায় কোম্পানিটির বার্ষিক হিসাব প্রকাশেও বিলম্ব ঘটে।

২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে চীনের প্রযুক্তিখাতে বিশাল অঙ্কের সব চুক্তির পেছনে ছিলো চায়না রেনেসাঁ। সংবাদসংস্থা সিএনএনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি কোম্পানিটি।

সিসিডিআই চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নিয়োজিত শৃঙ্খলা রক্ষা ও দুর্নীতি দমনবিষয়ক শীর্ষ সংস্থা।

এর আগে কোম্পানিটি বলেছিল, বাও “কোনও একটা তদন্তে সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থাকে সহযোগিতা” করছেন কেবল। এর বাইরে আর কোনো তথ্যই তারা দেননি।

চীনের শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে চুক্তির মধ্যস্থতাকারী হিসাবে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ ব্যক্তি বাও ফান, যার মধ্যস্থতায় ২০১৫ সালে দেশটির শীর্ষ দুই ফুড ডেলিভারি কোম্পানি মেইতুয়ান এবং ডিয়ানপিং এর মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। কোম্পানি দুইটির যৌথ মালিকানায় চালিত “সুপার অ্যাপ” এই মুহুর্তে চীনে অন্যতম অপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপ।

দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ফেব্রুয়ারিতে আর্থিক খাতে দুর্নীতি বিরোধী এক অভিযানে উঠে পড়ে লাগে। সেই সময় বাওয়ের নিখোঁজের সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক খাতের আরও ডজনখানেক শীর্ষ ব্যবসায়িক কর্মকর্তাকেও আটক করে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি।

বিশ্লেষকদের বিশ্বাস, দুর্নীতিবিরোধী ওই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল দেশের ভেতর বাইরের হুমকির থেকে শি জিনপিংয়ের মেয়াদকে শক্তিশালী করা।

সিসিডিআইয়ের সহযোগিতা ব্যুরো এবং বেইজিং মিউনিসিপ্যালের দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ একযোগে বাওয়ের মামলাটি তদন্ত করছে, বলেছে দ্যা ইকোনোমিক অবজারভার।

বাওয়ের মালাটির সঙ্গে চং লিন (Cong Lin) নামের আরেক শীর্ষ কর্মকর্তার সংযোগ রয়েছে, যিনি ২০২০ সালের জুলাইয়ে চায়না রেনেসাঁর প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। গত সেপ্টেম্বর থেকে তিনি আটক রয়েছেন। আইসিবিসি ফাইনান্সিয়াল লিজিংয়ে কর্মরত থাকার সময়ে তার কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আটক করে সরকারী সংস্থা।