প্লাজমার একটি বলে ৪৮ সেকেন্ডের জন্য ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে, যা সূর্যের কেন্দ্রের চেয়ে সাত গুণ ও সূর্যপৃষ্ঠের চেয়ে প্রায় ২০ হাজার গুণ বেশি গরম।
Published : 06 Apr 2024, 02:16 PM
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন এক ‘কৃত্রিম সূর্য’ বানিয়েছেন, যার চুল্লিতে রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রা অর্জন করা গেছে।
নিউক্লিয়ার ফিউশন শক্তির বিকাশে বড় এক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এটি।
নতুন এ বিশ্ব রেকর্ডে প্লাজমার একটি বলে ৪৮ সেকেন্ডের জন্য ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে, যা সূর্যের কেন্দ্রের চেয়ে সাত গুণ ও সূর্যপৃষ্ঠের চেয়ে প্রায় ২০ হাজার গুণ বেশি গরম।
এতে একশ সেকেন্ডেরও বেশি সময়ের জন্য প্লাজমাটিকে স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার ডেজিয়ন শহরের ‘কোরিয়া ইনস্টিটিউট অফ ফিউশন এনার্জি (কেএফই)’র গবেষকরা, যা নিউক্লিয়ার ফিউশনকে শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এক উপাদান বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
‘ক্লিন এনার্জি’ বা নবায়নযোগ্য শক্তির ‘হলি গ্রেইল’ হিসাবে বিবেচিত নিউক্লিয়ার ফিউশনে তারার মধ্যে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার প্রতিলিপি তৈরির মাধ্যমে প্রায় অফুরন্ত শক্তি সরবরাহের সম্ভাবনা দেখায়। আর এটি চালাতে জীবাশ্ম জ্বালানির মতো সীমিত কাঁচামালের প্রয়োজন হয় না।
আর বাণিজ্যিক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার করা নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়ার মতো বিষাক্ত বর্জ্যও তৈরি হয় না এতে।
গবেষণা দলটি বলেছে, এ যুগান্তকারী গবেষণায় তারা ‘টংস্টেন’ নামের দুষ্প্রাপ্য ধাতুকে একটি উপাদান হিসাবে ব্যবহার করেছেন, যেটির তাপ পরিবহন ক্ষমতা অনেক বেশি।
গবেষকরা এখন আশা করছেন, তাদের সর্বশেষ সাফল্যকে কাজে লাগিয়ে তিনশ সেকেন্ডে যেন ১০ কোটি ডিগ্রির প্লাজমা টিকিয়ে রাখা যায়, যার মাধ্যমে বানানো যাবে বিশ্বের প্রথম ‘ফিউশন ডেমোনস্ট্রেশন রিঅ্যাক্টর’।
“ফিউশন ডেমো চুল্লির জন্য প্রয়োজনীয় মূল প্রযুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি সবুজ সংকেত হল এ গবেষণা,” বলেন কেএফই-এর প্রেসিডেন্ট সুক জায় ইয়ুউ।
“বিশ্বের বৃহত্তম ফিউশন পরীক্ষা ‘আইটিইআর’ পরিচালনার পাশাপাশি ভবিষ্যতের ‘ডেমো’ চুল্লি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় মূল প্রযুক্তি সুরক্ষিত করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব আমরা।”
‘টেইলারিং টোকামাক এরর ফিল্ডস টু কন্ট্রোল প্লাজমা ইনস্টাবিলিটিস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট’ শিরোনামের এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার কমিউনিকেশনস’-এ।