সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় বিভিন্ন অ্যাপ স্টোরে দেখা গেছে হাজারের বেশি নকল চ্যাটজিপিটি অ্যাপ, যেখানে এই ভাইরাল এআই চ্যাটবটের জনপ্রিয়তা কাজে লাগাতে চায় হ্যাকাররা।
নকল চ্যাটজিপিটি অ্যাপে প্লাবিত হয়েছে গুগলের প্লে স্টোর। এর মধ্যে কয়েকটির ডাউনলোড সংখ্যা মিলিয়নের ঘরে। প্রাইভেসি গবেষক অ্যালেক্স ক্লেবার বলছেন, ম্যাকওএস অ্যাপ স্টোরেও ‘আশঙ্কাজনক’ হারে দেখা গেছে ভুয়া অ্যাপ।
“এইসব অ্যাপের বেশিরভাগই সস্তা অনুকরণ বা সরাসরি জালিয়াতি ছাড়া কিছুই নয়, যেগুলো প্রতিশ্রুতি অনুসারে কাজ করতে ব্যর্থ।” --এই সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে লিখেন তিনি।
“এইসব স্ক্যাম কেবল ব্যবহারকারীকেই প্রতারিত করে না, বরং বৈধ নির্মাতাদের খ্যাতিও নষ্ট করে। আর ম্যাকওএস প্ল্যাটফর্মে এটি অ্যাপ ইকোসিস্টেমের বৃদ্ধিও বাধাগ্রস্ত করে।”
এই প্রবণতার কারণে ‘জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফর্মার’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ অর্থাৎ ‘জিপিটি’ শব্দের পেটেন্ট নিতে বাধ্য হয়েছে ওপেনএআই। প্রাথমিকভাবে ডিসেম্বরে এই ট্রেডমার্কের জন্য আবেদন করেছিল কোম্পানিটি।
এই প্রক্রিয়া দ্রুত পরিচালনার অনুরোধ নাকচ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘পেটেন্ট অ্যান্ড ট্রেডমার্ক অফিস’। এর মানে দাঁড়ায়, ট্রেডমার্ক আবেদনের অনুমোদন পেতে নিজেদের অপেক্ষা অব্যাহত রাখতে হবে ওপেনএআই’কে। এই প্রসঙ্গে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ওপেনএআই’র মন্তব্য জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক সাড়া মেলেনি।
বিভিন্ন অ্যাপ স্টোর জুড়ে থাকা ক্ষতিকারক অ্যাপের বাইরেও এমন বেশ কিছু ‘বৈধ ক্লোন’ আছে বা ঘোষণা করা হয়েছে, যেগুলো ‘জিপিটি’ নাম ধার করেছে।
এই মাসের শুরুতে ইলন মাস্ক বলেন, ‘ট্রুথজিপিটি’ নামে ডাকা চ্যাটজিপিটির বিকল্প ব্যবস্থা তৈরির পেছনে কাজ করছেন তিনি। আর এটি একটি ‘সর্বোচ্চ সত্য সন্ধানী এআই’ হিসেবে কাজ করবে বলেও দাবি করেন মাস্ক।
একটি অলাভজনক কোম্পানি থেকে লভ্যাংশ প্রত্যাশী কোম্পানিতে পরিণত হওয়ার আগে ওপেনএআই সহ-প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করা মাস্ক বলেন, তার এআই ‘মহাবিশ্বের প্রকৃতি বোঝার’ চেষ্টা করবে ও মানবতার জন্য ‘সুরক্ষার সেরা উপায়’ নিয়ে আসবে।
ওপেনএআই’র জিপিটি-৪-এর চেয়ে শক্তিশালী সব ধরনের এআই ব্যবস্থার বিকাশ থামাতে ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য সুরক্ষা প্রোটোকল তৈরির গবেষণায় মনযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে অলাভজনক সংস্থা ‘ফিউচার অফ লাইফ ইনস্টিটিউট’-এর এক খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করা হাজারের বেশি স্বাক্ষরকারীর একজন ছিলেন মাস্ক।
“সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বিভিন্ন এআই ল্যাবে তুলনামূলক ক্ষমতাধর ডিজিটাল স্মৃতি তৈরির ও স্থাপনের প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা গেছে, যা কেউই এমনকি এগুলোর নির্মাতারাও বুঝতে, ভবিষ্যদ্বাণী দিতে বা নির্ভরযোগ্য উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।” --লেখা ছিল চিঠিতে।
“বর্তমান সময়ের ক্ষমতাধর, অত্যাধুনিক বিভিন্ন সিস্টেমকে তুলনামূলক নির্ভুল, নিরাপদ, ব্যাখ্যাযোগ্য, স্বচ্ছ, মজবুত, সারিবদ্ধ, বিশ্বস্ত ও অনুগত করার দিকে পুনর্নিবেশ করা উচিত বিভিন্ন এআই গবেষণা ও বিকাশের।”