ভবিষ্যতে হয়ত গবেষকরা পাশার ছক উল্টে পরীক্ষা করে দেখবেন – সেখানে ইঁদুরকে শিকারী হিসাবে নামিয়ে তার সামনে ছেড়ে দেওয়া হবে ভার্চুয়াল শিকার।
Published : 11 Dec 2023, 05:01 PM
ইদুঁরের মস্তিস্কের গতিবিধি বুঝতে বেশ কয়েক বছর ধরে পরীক্ষাগারে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি প্রযুক্তির ব্যবহার চলছিল। আর সম্প্রতি সে গবেষণাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা।
এতদিন পর্যন্ত ইঁদুরের চারপাশে সমতল ডিসপ্লে ব্যবহার হচ্ছিল, বাস্তবধর্মী পরিবেশের সিমুলেশন তৈরিতে যার সীমাবদ্ধতা রয়ে গিয়েছিলো। এর সমাধান হিসাবে ইঁদুরের চোখ মুখের সামনে একটি ভিআর চশমা জুড়ে দিয়েছে গবেষক দলটি। ইঁদুরকে একটি ভার্চুয়াল বিপদসঙ্কুল পরিবেশে ফেলে দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছেন সেই বিপদের মুখোমুখি হয়ে কীভাবে কাজ করছে প্রাণীটির মস্তিষ্ক।
মিনিয়েচার রোডেন্ট স্টেরিও ইলুমিনেশন ভিআর (আইএমআরএসআইভি) নামের ক্ষুদে হেডসেটটি ফিতা দিয়ে ঠিক মানুষের মতো করে ইঁদুরের চোখের সামনে বেঁধে দিয়েছেন গবেষকরা। তার পাশাপাশি প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী বিচরণ অর্থাৎ ভয় পেয়ে দৌঁড়ানোর মতো স্থানে সেগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়। “চশমা পরিহিত প্রাণীগুলোর বিচরণের জন্য একটি বিশেষ পরিবেশের নকশা করে বানানো হয়েছে,” বলেছেন দলটির অন্যতম প্রধান লেখক জন ইসা। “স্ক্রিন এবং লেন্সগুলোর সমন্বয়ে তৈরি –অপটিক্যাল ডিসপ্লে পরিহিত ইঁদুরের চোখের চারপাশ জুড়ে থাকে।”
পরীক্ষাটিতে ব্যবহৃত ইদুঁরগুলো আগের একইরকম পরীক্ষার তুলনায় কম সময়ে ভার্চুয়াল রিয়ালিটির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। মাংসের খোঁজে ডানা মেলা শিকারী পাখির আনুলিপি তৈরি করতে ডিসপ্লের উপরের দিকে কালো অবয়ব ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রতিক্রিয়ায় সেগুলো “মোটেও নতুন শেখা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো আচরণ করে নি, বরং তাদের আচরণ ছিলো সহজাত,” বলেন আরেক প্রধান লেখক ডম পাইক। “যেন সেটি ইঁদুরের মস্তিষ্কে আগে থেকেই লেখা ছিল।”
পরীক্ষারটির মাধ্যমে ভয়ে ইঁদুরের জড়সড় হওয়া কিংবা তীব্র বেগে ছুটে পালানোর মতো প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি স্নায়বিক কার্যক্রমও রেকর্ড করা সম্ভব হয়েছে।
ভবিষ্যতে হয়ত দলটি পাশার ছক উল্টে পরীক্ষা করে দেখবে– সেখানে ইঁদুরকে শিকারী হিসাবে নামিয়ে তার সামনে ছেড়ে দেওয়া হবে ভার্চুয়াল শিকার, প্রতিবেদনে লিখেছে এনগ্যাজেট।
মূল গবেষণাপত্রটি শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে স্নায়ু বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী নিউরনে।