ছায়াপথের ‘কঙ্কাল’ দেখালো জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ

ওয়েবের ছবিতে আইসি ৫৩৩২ কে দেখে মনে হচ্ছে যেন মহাকাশে রঙিন জলের ঘূর্ণিপাক।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2022, 08:48 AM
Updated : 28 Sept 2022, 08:48 AM

এবার মহাকাশের ‘ভুতুড়ে’ দিকটায় নজর পড়েছে নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির; জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের চোখ ধরা পড়েছে আইসি ৫৩৩২ ছায়াপথের মহাজাগতিক ‘কঙ্কাল’।

পৃথিবীর মিল্কিওয়ে ছায়াপথ থেকে দুই কোটি ৯০ লাখ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান আইসি ৫৩৩২ ছায়াপথের; আকারে মিল্কিওয়ের চেয়ে খানিকটা ছোটো। ছবিতে আইসি ৫৩৩২ কে দেখে মনে হয় যেন মহাকাশ থেকে রঙিন জলের ঘূর্ণিপাকের আলোকচিত্র পাঠিয়েছে জেমস ওয়েব।

ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) মঙ্গলবারে এক বিবৃতিতে ওই ছবির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছে, প্রায় সরাসরি পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকায় এ ছায়াপথের আলাদা গুরুত্ব আছে বিজ্ঞানীদের কাছে।

“এ কারণেই আমরা ছায়াপথটির প্যাঁচানো বাহুগুলোর সমতায় মুগ্ধ হওয়ার সুযোগ পাচ্ছি।”

আইস ৫৩৩২ এর ‘কঙ্কালসার’ বাহুগুলো স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে ওয়েবের তোলা ছবিতে। এ টেলিস্কোপের ‘মিড-ইনফ্রারেড ইনস্ট্রুমেন্ট (এমআইআরআই)’ মহাজাগতিক বস্তুগুলোকে দেখে বিশেষ তরঙ্গদৈর্ঘ্যে।

এমআইআরআই সেন্সর মহাকাশে ভাসমান ধুলার স্তর পেরিয়ে এমন কাঠামোকেও চিহ্নিত করতে পারে, যা অন্যান্য স্পেস টেলিস্কোপের চোখে অদৃশ্যই থাকে।

কিন্তু এ প্রযুক্তি ব্যবহারের সীমাবদ্ধতাও আছে। কেবল প্রচণ্ড শীতল পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারে এমআইআরআই সেন্সর। তাই এ সেন্সরের জন্য আলাদা কুলিং সিস্টেম আছে ওয়েবের।

ছবিতে উঠে আসা আইসি ৫৩৩২-এর সঙ্গে হাবল টেলিস্কোপের তোলা ছবির তুলনা করে দেখিয়েছে ইএসএ। হাবলের ছবিতে মহাকাশের অন্ধকার অঞ্চল হিসেবে উঠে এসেছে ধুলার আবরণে ঢাকা পড়া অংশগুলো।

ইএসএ বলছে, “ওয়েবের ছবিতে আর ধুলার আবরণে ঢাকা পড়ে নেই ওই অঞ্চলগুলো। ছায়াপথটি থেকে আসা মিড-ইনফ্রারেড আলো ধুলার স্তর ভেদ করে এসেছে।”

নতুন ছবিগুলো প্রকাশের সময় আইসি ৫৩৩২ এর কাঠামোকে রসিকতা করেই ‘কঙ্কালসার’ আখ্যা দিয়েছে নাসার ওয়েব টেলিস্কোপ দল।

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট বলছে, এ ঘটনায় ওয়েব ও হাবল টেলিস্কোপের জুটি বেঁধে কাজ করার সক্ষমতাই উঠে এসেছে। দুই টেলিস্কোপের ছবিগুলোর তুলনা করে ইএসএ বলেছে, “ছবিগুলো একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে অসাধারণ কাজ করছে। উভয়েই আইসি ৫৩৩২-এর কাঠামো এবং গঠন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছে।”