যুগান্তকারী এআই আইনে অনুমোদন দিল ইইউ

ওপেনএআইয়ের মতো ক্ষমতাধর, জটিল ও অনেক বেশি ব্যবহৃত যেসব কোম্পানি এআই মডেল তৈরি করে সেসব কোম্পানিকেও কোনো কিছু প্রকাশ করার ক্ষেত্রে এই আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2024, 06:15 AM
Updated : 15 March 2024, 06:15 AM

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নতুন এক যুগান্তকারী আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনপ্রণেতারা।

এ অনুমোদনের মাধ্যমে এআই প্রযুক্তির গঠনমূলক ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেল বলে উঠে এসেছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে।

ইউরোপের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে পুলিশিংসহ সকল ক্ষেত্রে কীভাবে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, তা নির্ধারণে প্রথমবারের মতো বিশ্বে কোনো আইন তৈরি হল।

এ আইনের মাধ্যমে এআই প্রযুক্তির ‘অপ্রীতিকর’ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। আইনটি ‘উচ্চ-ঝুঁকি’ হিসাবে বিবেচিত বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের জন্যও ‘কঠোর পাহারাদার’ হিসেবে কাজ করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে সিএনএন।

উদাহরণ হিসেবে, এআইয়ের মাধ্যমে চালিত সামাজিক ‘স্কোরিং সিস্টেম’ এবং কারও বংশ বা বর্ণ, রাজনৈতিক ঝোঁক বা যৌনতা অনুমানে যে কোনো ধরনের বায়োমেট্রিকভিত্তিক টুল ব্যবহার নিষিদ্ধ ইইউ’র ‘এআই অ্যাক্ট’-এর আওতায়।

পাশাপাশি, আইনটিতে এআইয়ের মাধ্যমে স্কুল বা কর্মক্ষেত্রে লোকজনের আবেগ অনুকরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এমনকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি এমন কিছু প্রোফাইলও নিষিদ্ধ করা হবে, যেগুলো থেকে ভবিষ্যতে অপরাধ সংঘটনের মতো ঝুঁকি রয়েছে।

এ ছাড়া, এআইয়ের ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে আইনটিতে একটি পৃথক বিভাগ রাখা হয়েছে, যা বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে শিক্ষা, নিয়োগ ও বিভিন্ন সরকারি পরিষেবাতে প্রবেশের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে। আর এতে করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা নিশ্চিতের পাশাপাশি তাদের ওপর অন্যান্য বাধ্যবাধকতাও আরোপ করা যাবে।

এই আইনের বিভিন্ন শর্ত পূরণের বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে ওপেনএআইয়ের মতো কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রেও, যারা চ্যাটজিপিটি’র মতো ক্ষমতাধর, জটিল ও বহুল ব্যবহৃত এআই মডেল তৈরি করেছে।

এ আইনে এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি বিভিন্ন ডিপফেইক ছবিও স্পষ্টভাবে ‘লেবেল’ করার শর্তও রয়েছে, যার সহায়তায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে নির্বাচন বিষয়ক ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা কমে আসতে পারে।

যুগান্তকারী আইনটি কার্যকর হতে চলেছে দুই বছরের মধ্যে। আর আইনটির দ্রুত বাস্তবায়ন এটাই প্রমাণ করে যে, ওপেনএআইয়ের তৈরি চ্যাটজিপিটি’র মতো বিভিন্ন এআই টুলের বাঁধভাঙা জনপ্রিয়তায় নজর রেখেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিনির্ধারকরা।

এ সপ্তাহে আইনটি ইইউ’র পার্লামেন্টে পূর্ণাঙ্গ ভোটের মাধ্যমে অনুমতি পেলেও এর প্রথম প্রস্তাবনা উত্থাপিত হয়েছিল ২০২১ সালে।