চাঁদের প্রতি নাসার এমন আগ্রহ আসলে আর্টেমিস মিশনের প্রস্তুতির অংশ। মিশনটি সফল হলে সামনের বছরই চাঁদের পৃষ্ঠে মানুষের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
Published : 08 Jan 2024, 06:06 PM
‘লুনার ল্যান্ডার’ নিয়ে চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে এক রকেট। ৫০ বছরের মধ্যে এই প্রথম নাসার কোনো অভিযানে কোনো ল্যান্ডার চাঁদের পৃষ্ঠে নামবে।
অ্যাপোলো মিশনের পর চাঁদে মার্কিন নভোযান পাঠানোর প্রথম ঘটনাও এটি।
পাশাপাশি, এটি মার্কিন রকেট কোম্পানি ‘ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্স’-এর রকেট ভালকানের প্রথম মহাকাশ যাত্রা। মিশনটির সাফল্যের ওপর নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রে কোম্পানিটির নতুন প্রযুক্তির গুরুত্ব, যেখানে স্পেসএক্স-এর মতো সফল কোম্পানির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনাও রয়েছে।
ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্স বা ‘ইউএলও’ নামের কোম্পানিটি সংগঠিত হয়েছিল লকহিড মার্টিন ও বোয়িংয়ের যৌথ উদ্যোগ হিসেবে। এ মূহুর্তে ‘অ্যাটলাস ৫’ ও ‘ডেল্টা ৪’ শ্রেণির রকেট নিয়ে কাজ করছে কোম্পানি দুটি।
ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ রকেটগুলো খরচসাপেক্ষ হলেও নির্ভরযোগ্য। এমনকি মার্কিন সরকারের বিভিন্ন ‘টপ-সিক্রেট’ মিশন পরিচালনার ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়েছে এগুলো।
রকেটের সঙ্গে ‘পেরেগ্রিন’ নামের একটি মুন ল্যান্ডারও আছে, যা বানিয়েছে মার্কিন রোবটিক কোম্পানি অ্যাস্ট্রবায়োটিক। কোম্পানিটিকে বাছাই করেছে নাসা নিজেই। আর এ ল্যান্ডারে কয়েকটি ছোট রোভারের পাশাপাশি বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষা চালানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশও যুক্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া, বিভিন্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানির পাঠানো ‘টাইম ক্যাপসুল’ ও মানব শরীরের অবশিষ্টাংশও বহন করছে মহাকাশযানটি। তবে, এমন পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা করেছেন ‘স্বদেশি আমেরিকানদের শহর’ হিসেবে পরিচিত ‘নাভাজো নেশন’-এর নাগরিকরা, যারা চাঁদকে ব্যাখ্যা করেন ‘আদিবাসী সংস্কৃতির আধ্যাত্মিকতা ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ’ হিসেবে।
তাদের দাবি, চাঁদের পৃষ্ঠে মানব শরীরের অবশিষ্টাংশ সমাহিত করলে তা ‘মানুষের স্বর্গীয় দেহে গভীর অপবিত্রতা’ সৃষ্টি করবে।
এ উৎক্ষেপণ এমন এক সময় হল, যখন নাসা’সহ অন্যান্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থাও চাঁদের দিকে মনযোগ বাড়িয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভারত, চীন, জাপান ও ইসরায়েল’সহ বেশ কিছু দেশকে চাঁদে অবতরণের মিশন পরিচালনা করতে দেখা গেছে। তবে, এ ধরনের সকল মিশনই সফল ছিল, বিষয়টি এমন নয়। এ ছাড়া, চাঁদের পৃষ্ঠে নিরাপদ উপায়ে অবতরণ এখনও চ্যালেঞ্জিং বিষয়।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট বলছে, চাঁদের প্রতি নাসার এমন আগ্রহ আসলে আর্টেমিস মিশনের প্রস্তুতির অংশ। মিশনটি সফল হলে সামনের বছরই চাঁদের পৃষ্ঠে মানুষের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ধরনের মিশন পরিচালনার লক্ষ্য, চন্দ্রপৃষ্ঠে মানব বসতি স্থাপন করা, যার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে মঙ্গল গ্রহে আবাসস্থল তৈরির সম্ভাবনাও রয়েছে।