দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জনমত প্রভাবিত করতে এ মিশনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে সামাজিক মাধ্যম।
Published : 16 Mar 2024, 12:33 PM
চীনের সরকারি কর্মকর্তাদের ট্রল করার ও তাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার লক্ষ্যে এক ‘গোপন মিশন’ পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে সিআইএ’র বিরুদ্ধে।
অভিযোগ অনুসারে, এমনটি করতে চীনা কর্মকর্তাদের বিভিন্ন তথ্য ফাঁস ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক খবর ছড়িয়েছে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাটি।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অপারেশনটি শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে, যার লক্ষ্য ছিল চীনে ক্ষমতাসীন শি জিংপিং সরকারের মাথায় ‘চিন্তার ভাঁজ ফেলা’।
পাশাপাশি, চীনা সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে ভুয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্ট তৈরির অভিযোগ উঠেছে সিআইএ এজেন্টদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রয়েছে, ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা দেশের বাইরে অঢেল সম্পদ লুকিয়ে রেখেছে বা অন্যান্য দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে চীনের অর্থায়নে দুর্নীতি ছিল, এমন দাবি করে চীনা সরকারের সমালোচনা।
এ প্রসঙ্গে রয়টার্সকে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি সিআইএ। ফলে, মিশনটি এখনও চলমান কি না তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
রয়টার্স বলছে, এ অপারেশনের অনুমোদন দিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, এবং এটি পরিচালিত হয়েছিল চীনের বাইরে থেকে।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জনমত প্রভাবিত করতে এ মিশনে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে সামাজিক মাধ্যম। আর এতে সিআইএ’র অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগটি, যেখানে এইসব অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশগুলোয় চলমান বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পেও আর্থিক ঋণ দিয়েছে চীন।
রাষ্ট্রিয়ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো নতুন কিছু নয়। তবে, এমন খবর ছড়ানোর প্রবণতা সেইসব দেশের বিরুদ্ধেই বেশি দেখা যায়, যারা যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্যবস্তু বানায়। এমনকি মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা বা ট্রল করার উদ্দেশ্যে ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরির অভিযোগ এসেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধেও।
গত বছরই মার্কিন নির্বাচনকে বানচাল করার উদ্দেশ্যে একটি ‘ট্রল কোম্পানি’ প্রতিষ্ঠার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাবেক মিত্র ও প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানি ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন।
একই বছর সংগীত সাময়িকী রোলিং স্টোনসের প্রতিবেদনে উঠে আসে, ইউরোপীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের প্রভাবিত করার লক্ষ্যে একটি ভুয়া ডানপন্থী প্রকাশনা তৈরি করেছিলে চীনভিত্তিক এক নেটওয়ার্ক।
অন্যদিকে, টিকটকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণ হিসেবে মার্কিন রাজনীতিবিদরা দাবি করে আসছেন, চীনা সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের প্রভাবিত করতে বা তাদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি চালাতে পারে।