ইথারনেটের ধারণাটির সূত্রপাত ঘটে যখন মেটক্যাফকে একটি অফিস প্রিন্টারে সংযোগ দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে ‘থ্রিকম’ নামে কম্পিউটিং নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম নির্মাতা শীর্ষ কোম্পানিরও সহপ্রতিষ্ঠাতা হন তিনি।
Published : 22 Mar 2023, 06:27 PM
হাতে গোণা যে কয়টি উদ্ভাবনের যে কোনো একটি বাদ দিলে গোটা ইন্টারনেট অচল হয়ে যাবে তার একটি ইথারনেট সংযোগ প্রযুক্তি। বিশাল সার্ভার থেকে বাসাবাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ- সবখানেই এখনও এটি অতি আবশ্যিক। সেই ইথারনেট উদ্ভাবক বব মেটক্যাফের হাতে গেল এ বছরের টিউরিং অ্যাওয়ার্ড, যাকে বলা হয় কম্পিউটিং জগতের নোবেল পুরস্কার।
মেটক্যাফের এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পর অর্ধ শতাব্দি কেটে গেলেও এটি এখনও ইন্টারনেটের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।
ডেটা সেন্টারের অভ্যন্তরে থাকা সার্ভার থেকে শুরু করে বিভিন্ন টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক সংযোগের মানদণ্ড হিসাবে বিবেচনা করা হয় ইথারনেটকে।
ইথারনেটের ‘উদ্ভাবন, মানকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ’-এর জন্য ৭৬ বছর বয়সী মেটক্যাফকে ২০২২ সালের ‘টিউরিং’ পুরস্কারে ভূষিত করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘দ্য অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটিং মেশিনারি’, যা কম্পিউটিং জগতের নোবেল পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত।
এই পুরস্কারের সঙ্গে অ্যালফাবেট মালিকানাধীন গুগলের সহায়তায় ১০ লাখ ডলারের আর্থিক অনুদানের কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
ইথারনেটের ধারণাটির সূত্রপাত ঘটে যখন মেটক্যাফকে একটি অফিস প্রিন্টারে সংযোগ দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে ‘থ্রিকম’ নামে কম্পিউটিং নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম নির্মাতা শীর্ষ কোম্পানিরও সহ-প্রতিষ্ঠাতা হন তিনি।
৭০’র দশকের শুরুতে তিনি ‘জেরক্স পালো আলটো রিসার্চ সেন্টার’-এ কাজ করেন, যারা কি না ব্যক্তিগত কম্পিউটার এমনকি লেজার প্রিন্টারও উদ্ভাবন করেছে। পরবর্তীতে মেটক্যাফ এমন এক নেটওয়ার্কিং পদ্ধতির পরিকল্পনা সাজান, যেগুলো সংযোগে এতটাই পারদর্শী হবে যে নেটওয়ার্কে কম্পিউটার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পরও ঝামেলাহীনভাবে কাজ করবে। আর এই পদক্ষেপই বৈশ্বিকভাবে ইন্টারনেটের দরজা খুলে দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
১৯৭৩ সালে হার্ভার্ডের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগ থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৬৯ সালে ‘ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’ থেকে স্নাতক পাশ করা মেটক্যাফ।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি রয়টার্সকে বলেন, ইন্টারনেটে কম্পিউটার সংযোগের ব্যবস্থা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার খাতে।
মেটক্যাফ আরও বলেন, এর আগের প্রজন্মের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা ‘তথ্যের অভাবে মারা গেছে।’ তবে, শতকোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে ডেটা প্রদান করায় এটি এখন কোনো সমস্যাই নয়। তবে, এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত হয় এমন ডেটা তুলনামূলক ভালো উপায়ে কম্পিউটারে সংযোগ ঘটানো।
এইসব নেটওয়ার্কের সঙ্গে অবশ্য মানুষের মস্তিষ্কে তথ্য আদানপ্রদান ব্যবস্থার তুলনা এখনও অনেক দূরের বিষয়। কারণ এর প্রতিটি নিউরনে ১০ হাজারের বেশি সংযোগ রয়েছে।
নিউরাল নেটওয়ার্ক সংযোগে উন্নতির বিশাল জায়গা ‘এআই’র ভবিষ্যত সম্পর্কে আমার আশাবাদের কারণ। আর আমি মনে করি এটা স্কেলিং চালিয়ে যাবে।’ --যোগ করেন তিনি।