ওয়ার্ল্ডকয়েন বলছে, এরইমধ্যে ২০ লাখের বেশি লোকজন প্রকল্পটিতে সাইনআপ করেছেন।
Published : 04 Aug 2023, 04:55 PM
ওপেনএআই’র প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যানের ‘চোখের মণি স্ক্যান করা’ ক্রিপ্টো প্রকল্প ‘ওয়ার্ল্ডকয়েন’-এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কেনিয়া।
এই প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলো খতিয়ে দেখছে কেনিয়ার সরকার। পাশাপাশি, তারা ওয়ার্ল্ডকয়েনকে ডেটা সংগ্রহ বন্ধ করার নির্দেশনাও দিয়েছে বলে উঠে এসেছে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে।
ওয়ার্ল্ডকয়েন এমন এক প্রকল্প, যেখানে ব্যবহারকারীর ‘আইরিস’ ব্যবহার করে একটি বিশেষ ডিজিটাল পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়। আর কোম্পানির ওয়ার্ল্ড অ্যাপের সহায়তায় ব্যবহারকারীরা নিজেদের ডিজিটাল মুদ্রা এতে যুক্ত করতে পারেন। গত সপ্তাহে এই প্রকল্প চালুর পর থেকে গোটা বিশ্বের শীর্ষ শহরগুলোর লোকজনকে উজ্জ্বল রূপালি রঙের গোলাকার ‘অর্ব’-এ নিজেদের চোখ স্ক্যান করতে দেখা গেছে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কেনিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই আইরিস স্ক্যানিং ব্যবস্থায় ‘নিরাপত্তা ও স্টোরেজে স্বচ্ছতার অভাব’ দেখতে পাওয়ায় তারা এটি পর্যবেক্ষণ করে দেখছে। আর এই ক্রিপ্টোমুদ্রা সংশ্লিষ্ট ‘অনিশ্চয়তার’ বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে তারা। এ ছাড়া, আইরিস স্ক্যানিংয়ের জন্য লোকজনকে আর্থিক সুবিধা দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংস্থাটি।
What a launch week. Thank you for all of your support & feedback. Looking forward to sharing community updates soon. pic.twitter.com/nvoVzBDfFB
— Worldcoin (@worldcoin) August 1, 2023
প্রযুক্তি সাইট ‘রেস্ট অফ ওয়ার্ল্ড’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেবাটিতে কেবল সাইনআপ করেই ২৫টি ওয়ার্ল্ড কয়েন পেয়েছেন কেনিয়ার নাগরিকরা, যেগুলোর দাম প্রায় সাত হাজার একশ কেনীয় শিলিং (প্রায় ৫০ ডলার)। সাইটটি আরও যোগ করে, ‘এই প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে তুলনামূলক কম মানুষই জানে’। এর বদলে তারা ওই ৫০ ডলারের রিওয়ার্ড পেতেই বেশি আগ্রহী। তবে এই নিষেধাজ্ঞায় দেশটির কর্তৃপক্ষ হাজার হাজার মানুষের আইরিস স্ক্যানের জন্য অপেক্ষা করার বিষয়টি এড়িয়ে গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে কেনিয়ার সংবাদপত্র ‘দ্য স্ট্যান্ডার্ড’।
ওয়ার্ল্ডকয়েনের মূল কোম্পানি ‘টুলস ফর হিউম্যানিটি’র সিইও অ্যালেক্স ব্লানিয়া টুইট করেন, কেনিয়ার স্থানীয় নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে কোম্পানিটি আপাতত সেখানে ‘ওয়ার্ল্ড আইডি’র যাচাইকরণ বন্ধ রেখেছে। তিনি আরও যোগ করেন, ‘ওয়ার্ল্ড আইডি আসলে প্রাইভেসি সুরক্ষার জন্য তৈরি।’ আর কোম্পানি এটি বৈশ্বিকভাবেই চালু করবে।
কেবল কেনিয়াই যে ওয়ার্ল্ডকয়েনের সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো খতিয়ে দেখছে, তা নয়। সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রকরাও এই প্রকল্প পর্যবেক্ষণ করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ।
তবে ওয়ার্ল্ডকয়েনের দাবি, তাদের সংগৃহিত ‘বায়োমেট্রিক ডেটা কখনওই অর্ব থেকে বের হয় না’। আর ব্যবহারকারী সাইনআপ করার পর এটি ‘চিরতরে’ মুছে যায়। এর বদলে কোম্পানি ব্যবহারকারীর ‘আইরিস কোড’ সংরক্ষণ করে, যা তার পরিচয়বহনকারী বিশেষ এক সংখ্যা।
ওয়ার্ল্ডকয়েন বলছে, এরইমধ্যে ২০ লাখের বেশি লোকজন প্রকল্পটিতে সাইনআপ করেছেন।