‘ক্যারেক্টার ডটএআই’ নামের নতুন একটি এআই স্টার্টআপ কোম্পানিতে লাখ লাখ ডলার বিনিয়োগ করতে আলোচনা চালাচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল।
বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, নতুন এই স্টার্টআপ কোম্পানির লক্ষ্য হল, ব্যবহারকারীর চাহিদা বিবেচনায় রেখে বিভিন্ন চ্যাটবট মডেল প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ পাওয়া।
তৃতীয় এক সূত্রের তথ্য অনুসারে, এ বিনিয়োগের গঠন প্রক্রিয়া রূপান্তরযোগ্য হতে পারে, যা গুগলের সঙ্গে কোম্পানির বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। নিজস্ব এআই মডেল প্রশিক্ষণের জন্য গুগলের বিভিন্ন ক্লাউড পরিষেবা ও ‘টেনসর প্রসেসিং ইউনিট (টিপিইউ)’ ব্যবহার করে থাকে কোম্পানিটি।
এ বিষয়ে গুগল ও ক্যারেক্টার এআইয়ের মন্তব্য জানতে চাইলেও তাদের সাড়া পায়নি রয়টার্স।
এআই স্টার্টআপ কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক গুগল কর্মী নোয়াম শাজির ও ড্যানিয়েল দে ফ্রাইটাস, যেখানে ব্যবহারকারীরা বিলি আইলিশের মত তারকা বা বিভিন্ন অ্যানিমে চরিত্রের ভার্চুয়াল সংস্করণের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান।
পাশাপাশি নিজ চরিত্রের চ্যাটবট ও এআই অ্যাসিস্ট্যান্টও তৈরি করা যায় এতে। এআই মডেলটি বিনামূল্যেই ব্যবহার করা যায়। এছাড়া, নয় দশমিক ৯৯ ডলারের গ্রাহক সেবা রয়েছে, যার মাধ্যমে ভার্চুয়াল লাইন এড়িয়ে সরাসরি চ্যাটবটে প্রবেশাধিকার পান ব্যবহারকারী।
১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ব্যবহারকারীদের কথা বিবেচনায় রেখে নিজস্ব চ্যাটবটে বেশ কয়েকটি চরিত্র ও কণ্ঠস্বর বাছাইয়ের সুবিধা রেখেছে ক্যারেক্টার ডটএআইয়ে। ইসরায়েলভিত্তিক সফটওয়্যার কোম্পানি সিমিলার ওয়েবের তথ্য অনুসারে, এ সুবিধা ওয়েবসাইটের ৬০ শতাংশ ট্রাফিকিংয়ের পেছনে ভূমিকা রাখে।
এই প্রক্রিয়ায় ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি, গুগলের বার্ড ও অন্যান্য এআই চ্যাটবটের চেয়ে চমকপ্রদ ব্যক্তিত্বওয়ালা এআই সহায়ক ব্যবস্থা রাখার কারণে বাজারে নিজেদের ইতিবাচক অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে কোম্পানিটি।
এর আগে ক্যারেক্টার ডটএআই বলেছে, এআই মডেল চালুর প্রথম ছয় মাসে কোম্পানির ওয়েবসাইট মাসে ১০ কোটি ব্যবহারকারী আকৃষ্ট করতে পেরেছিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির আর্থিক তহবিল বাড়ানোর লক্ষ্যে ক্যারেক্টার ডটএআই বিভিন্ন যৌথ বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলছে, যারা কোম্পানির বাজারমূল্যকে পাঁচশ কোটি ডলারে নিতে সহায়ক হতে পারে। মার্চে মার্কিন বিনিয়োগ কোম্পানি আন্দ্রিসেন হরউইটজের কাছ থেকেও কোম্পানির বাজারমূল্য একশ কোটি হিসাব করে ১৫ কোটি ডলারের তহবিল পেয়েছিল কোম্পানিটি।
বেশ কিছুদিন ধরেই বিভিন্ন এআই স্টার্টআপে বিনিয়োগ করছে গুগল। এর মধ্যে রয়েছে এআই কোম্পানি অ্যানথ্রোপিকের সঙ্গে দুইশ কোটি ডলারের চুক্তি, যেখানে আগের বিনিয়োগও সম্পৃক্ত। এ ছাড়া নিজস্ব এআই মডেলে গুগল ক্লাউড সেবার পাশাপাশি টিপিইউ’র সর্বশেষ সংস্করণও ব্যবহার করে থাকে অ্যানথ্রোপিক।
এ বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সাম্প্রতিক ট্রেন্ডের অংশ, যেখানে ব্যবহারকারীর জন্য এআই মডেল তৈরির প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে বিভিন্ন শীর্ষ ক্লাউড সেবাদাতা এআই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করে তাদের নিজস্ব ক্লাউড পরিষেবা বা হার্ডওয়্যার ব্যবহারের সুযোগ দেয়। উদাহরণ হিসেবে ওপেনএআইয়ের পেছনে মাইক্রোসফটের বিনিয়োগ বা অ্যানথ্রোপিকের পেছনে গুগল ও অ্যামাজনের বিনিয়োগের কথা বলা যায়।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে এক আয়োজনে মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফটিসি’র চেয়ারপার্সন লিনা খান বলেন, বিভিন্ন এআই স্টার্টআপে ক্লাউড সেবাদাতা কোম্পানিগুলোর আর্থিক বিনিয়োগ প্রতিযোগিতাবিরোধী আচরণের মধ্যে পড়ে কি না, তা নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে সংস্থাটি।