বাণিজ্যিক স্পেসফ্লাইটের পরিসর বাড়ানোর লক্ষ্যে ইলন মাস্ক মালিকানাধীন কোম্পানিটির সর্বশেষ ও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাজি এটি।
Published : 12 Sep 2024, 04:49 PM
স্পেসএক্স’র ক্যাপসুল থেকে প্রথম প্রাইভেট স্পেসওয়াক পরিচালনার দ্বারপ্রান্তে পোলারিস ডন মিশনের নভোচারীরা।
বৃহস্পতিবার নভোচারীরা এ ক্যাপসুল থেকে বেরিয়ে এ প্রচেষ্টা চালাবেন, যার আগে বেশ কয়েক ঘণ্টা মিশনটি বিলম্বিত হয়েছে। এর পাশাপাশি, কোম্পানির সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এই মিশনে তারা নিজেদের নতুন স্পেসস্যুটও পরীক্ষা করে দেখবেনে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলটি উৎক্ষেপণ করে স্পেসএক্স, যার মধ্যে একজন বিলিয়নেয়ার উদ্যোক্তা, একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক পাইলট ও স্পেসএক্স-এর দুইজন কর্মী আছেন। কক্ষপথে পৌঁছানোর পর থেকে তারা সেখানেই অবস্থান করছেন।
বাণিজ্যিক স্পেসফ্লাইটের পরিসর বাড়ানোর লক্ষ্যে ইলন মাস্ক মালিকানাধীন কোম্পানিটির সর্বশেষ ও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাজি এটি।
বৃহস্পতিবার স্পেসএক্স বলেছে, এ ঘটনার লাইভ স্ট্রিম শুরু হবে নিউ ইয়র্ক সময় ভোর চারটা ৫৫ মিনিটে, যেখানে দুইজন নভোচারী ক্রু ড্রাগন থেকে বেরোবেন। আর দুইজন এর ভেতরেই থাকবেন।
ক্যাপসুলটি ভূপৃষ্ঠ থেকে সাতশ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছানোর পর একেবারে চাপমুক্ত হয়ে যাবে। ফলে, গোটা ক্রুকে অক্সিজেন পেতে স্পেসএক্স-এর তৈরি স্লিম স্পেসস্যুটের ওপর নির্ভর করতে হবে।
পোলারিস ডন মিশনের অর্থায়ন করেছেন ৪১ বছর বয়সী বিলিয়নেয়ার জ্যারেড আইজ্যাকম্যান, যিনি ইলেকট্রনিক পেমেন্ট কোম্পানি ‘শিফট৪’-এর প্রতিষ্ঠাতা। এর আগে ২০২১ সালে স্পেসএক্স-এর সঙ্গে যৌথভাবে ‘ইনস্পিরেশন৪’ মিশনেও অর্থায়ন করেছেন তিনি।
মিশনগুলোতে নিজের পরিশোধ করা আর্থিক খরচ সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশে রাজি হননি তিনি। তবে, ক্রু ড্রাগনের অন্যান্য ফ্লাইটে প্রতিটি সিটের দাম প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ডলার হওয়ায় এইসব মিশনের খরচ হয়ত কয়েক কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
পোলারিস মিশনের অন্যান্য সদস্যের মধ্যে রয়েছেন ৫০ বছর বয়সী স্কট পটিট, যিনি এ মিশনের পাইলট ও যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার ফোর্সের অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট কর্নেল। আর স্পেসএক্স-এর দুই জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী ৩০ বছর বয়সী সারাহ জিলিস ও ৩৮ বছর বয়সী আনা মেনন।
অ্যাপোলো যুগের পর সবচেয়ে দূরে
বুধবার নভোযানটি পৃথিবীর এক উপবৃত্তাকার কক্ষপথে অন্তত ছয়বার পরিক্রমণ করেছে, যেখানে ভূপৃষ্ঠ থেকে এর সবচেয়ে কাছাকাছি উচ্চতা ছিল ১৯০ কিলোমিটার ও এর সর্বোচ্চ উচ্চতা বেড়ে গিয়ে পৌঁছেছিল এক হাজার চারশ কিলোমিটার পর্যন্ত, যা ১৯৭২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালিত সর্বশেষ অ্যাপোলো মিশনের পর থেকে মানববাহী কোনো মহাকাশযানের পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে যাওয়ার ঘটনা।
“এদিকে, এভা নামের এ স্পেসস্যুটে চাপের গতিশীলতা পরীক্ষা, অবস্থান শনাক্ত করা ও মাইক্রোগ্র্যাভিটি’তে এর প্রবেশের প্রস্তুতি নেওয়ার পেছনেও কয়েক ঘণ্টা সময় দিয়েছেন মিশনের নভোচারীরা,” বলেছে স্পেসএক্স।
স্পেসওয়াকের জন্য আইজ্যাকম্যান ও জিলিস ক্রু ড্রাগন থেকে অক্সিজেন লাইন নিয়ে বের হবেন। আর পটিট ও মেনন ক্যাপসুলের ভেতরেই থাকবেন।
অতীতে স্পেসওয়াক পরিচালনা করেছেন শুধু সরকারি নভোচারীরা, তাও বেশ কয়েক বছর ধরে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর।