১৯৭৬ সালে আর্জেন্টিনায় সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে গুম ও খুন করা হয়। এর মধ্যে ছিল প্রায় পাঁচশ শিশু। আর এদের বেশিরভাগই ছিলেন সাধারণ নাগরিক।
Published : 26 Jul 2023, 04:16 PM
আর্জেন্টিনায় ’৭০ ও ৮০’র দশকে রক্তক্ষয়ী সামরিক শাসন চলাকালীন নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্তানের বর্তমান চেহারা কেমন হতে পারে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি এক প্রকল্পে সেটির বাস্তব রূপ দেখিয়েছেন দেশটির শিল্পী সান্তিয়াগো ব্যারোস।
“তাদের চোখের দিকে তাকান, আপনাকে প্রশ্ন করবে ও মনে করিয়ে দেবে যে ওই ভয়াবহতা এখনও রয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এদের সত্যিকারের কোনো পরিচয় নেই।” --বলেন ব্যারোস।
এই প্রকল্পের ছবিগুলো @IAbuelas নামে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করছেন তিনি।
১৯৭৬ সালে আর্জেন্টিনায় সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে গুম ও খুন করা হয়। এর মধ্যে ছিল প্রায় পাঁচশ শিশু। আর এদের বেশিরভাগই ছিলেন সাধারণ নাগরিক। আর ‘আবুয়েলাস অফ প্লাজা দে মায়ো’ নামের মানবাধিকার সংগঠন তৈরি করে পরিচিতি পান ভুক্তভোগীদের মা ও দাদিরা, যেখানে তারা নিজেদের প্রিয়জন হারানোর জবাব দাবি জানান।
এরইমধ্যে একশ ৩২ জন নাতি-নাতনির সন্ধান পাওয়া দলটি ব্যারোসের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে তারা এটিও উল্লেখ করেছে, শিশুদের পরিচয় শনাক্ত করার ‘একমাত্র উপায়’ হল ডিএনএ পরীক্ষা।
“আমরা অনুসন্ধানের প্রতিটি উদ্যোগকেই স্বাগত জানাই। তবে…এই উদ্যোগ বিজ্ঞানভিত্তিক নয় বরং শৈল্পিকভাবে তৈরি।” --এক বিবৃতিতে বলেছে সংস্থাটি।
মিডজার্নি অ্যাপের সহায়তায় আবুয়েলাস ওয়েবসাইটের পাবলিক আর্কাইভ থেকে হারিয়ে যাওয়া মা ও বাবাদের ছবি মিলিয়ে ওই শিশুদের এখনকার চেহারা দেখতে কেমন হবে, তার সম্ভাব্য ছবি বানিয়েছেন ব্যারস। আর প্রতিটি সমন্বয়ের বেলায় অ্যাপটি শিশুদের চেহারার পুরুষ ও নারী সংস্করণের ছবি দেখিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
“আমার মনে হয়েছে, আমাকে নাতি-নাতনিদের এমন প্রাপ্তবয়স্ক ছবি কল্পনা করতে হবে, যেখানে তাদের চেহারায় এরইমধ্যে ভাঁজ পড়ার পাশাপাশি ধূসর রঙের চুল রয়েছে।” --বলেন ব্যারোস।
এদিকে, বন্দীশালায় জন্ম নেওয়া নিজের সৎ ভাইকে খোঁজা আবুয়েলাস দলের সদস্য এস্তেবান হেরেরা বলেন, অনেকে ভুলবশত শিল্পীর বদলে এই দলকেই এআই’র মাধ্যমে ছবি তৈরি করতে বলছেন।
“একজন ব্যক্তি নিজের শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দলটিকে সহায়তা দিতে চেয়েছেন।” --বলেন হেরেরা। আর নিজের মায়ের গর্ভবতী থাকাকালীন রাষ্ট্রের মাধ্যমে ‘গুম’ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারার পরই দলটিতে যোগ দিয়েছেন তিনি।
ব্যারোস বলেন, সবসময়ই তার ইচ্ছা ছিল আবুয়েলাস’র মিশনে সহায়তা দেওয়া। আর তরুণ প্রজন্মকে অতীতের নৃশংসতা সম্পর্কে জানার উপায় হিসেবে এআইকেই ব্যবহার করেছেন তিনি।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই প্রক্রিয়া ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা বা আবুয়েলাসের অন্যান্য পদ্ধতির’ বিকল্প নয়।