‘উইলো’ নামের নতুন চিপে কয়েকটি যুগান্তকারী উন্নতি যোগ করা হয়েছে, যা দরকারি ও বড় আকারের কোয়ান্টাম কম্পিউটারের পথ তৈরি করবে, বলেছে গুগল।
Published : 10 Dec 2024, 03:40 PM
একটি নতুন কোয়ান্টাম কম্পিউটিং চিপ উন্মোচন করেছে সার্চ জায়ান্ট গুগল। আর কোম্পানির দাবি, এ চিপটি যে সমস্যা সমাধানে পাঁচ মিনিট সময় নেয়; সেই একই সমস্যা সমাধানে বর্তমান বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটারের লাগবে দশ সেপ্টিলিয়ন বা একের পর ২৫টি শূন্য বসালে যে সংখ্যা হয়, তত বছর।
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং নামে পরিচিত খাতের সর্বশেষ উদ্ভাবন এ চিপ; যা পার্টিকল ফিজিক্সের সূত্র ব্যবহার করে নতুন ধরনের বিষ্ময়কর শক্তিশালী কম্পিউটার তৈরির সম্ভাবনা জাগাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
‘উইলো’ নামের নতুন চিপে কয়েকটি যুগান্তকারী উন্নতি যোগ করা হয়েছে, যা দরকারি ও বড় আকারের কোয়ান্টাম কম্পিউটারের পথ তৈরি করবে, বলেছে গুগল।
তবে, বিশেষজ্ঞদের মতে, উইলো আপাতত একটি পরীক্ষামূলক ডিভাইস, যার অর্থ বাস্তব জগতের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী কোয়ান্টাম কম্পিউটার এখনও কয়েক বছর ও কয়েকশ কোটি ডলার দূরে।
কোয়ান্টাম দ্বন্দ্ব
সাধারণ ফোন অথবা ল্যাপটপের কম্পিউটারের তুলনায় কোয়ান্টাম কম্পিউটার আলাদাভাবে কাজ করে।
এসব কম্পিউটার কোয়ান্টাম মেকানিক্স ব্যবহার করে, অর্থাৎ অতি-ক্ষুদ্র কণার অদ্ভুত আচরণ ব্যবহার করে প্রচলিত কম্পিউটারের তুলনায় অনেক দ্রুত সমস্যা সমাধান করতে পারে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটারের পূর্ণ ক্ষমতার ব্যবহার বিভিন্ন জটিল প্রক্রিয়াকে গতিশীল করবে, যেমন নতুন ওষুধ তৈরি করা।
এটি বেআইনি কাজে ব্যবহার হতে পারে এমন শঙ্কাও রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে, সংবেদনশীল ডেটা রক্ষায় ব্যবহৃত এনক্রিপশন ভাঙতে এর ব্যবহার হতে পারে।
গুগলের ‘কোয়ান্টাম এআই’ ল্যাব ‘উইলো’ তৈরি করেছে যার নেতৃত্বে রয়েছেন হার্টমুট নেভেন। তিনি নিজেকে এ প্রকল্পের “প্রধান আশাবাদী” হিসাবে বর্ণনা করেন বলে লিখেছে বিবিসি।
নেভেন বিবিসিকে বলেন, কিছু প্র্যাকটিকাল কাজে উইলো ব্যবহৃত হতে পারে, এবং আপাতত এর বেশি তথ্য প্রদান করতে অস্বীকার করেছেন। তবে, বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার হবে এমন চিপ আসতে এ দশকের শেষ অব্দি সময় লাগবে বলে আরও যোগ করেন তিনি।
প্রাথমিকভাবে এ অ্যাপ্লিকেশনগুলো বিভিন্ন সিস্টেমের সিমুলেশন হবে যেখানে কোয়ান্টাম প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ।
“উদাহরণ হিসেবে, ওষুধ ও এ খাতের উন্নয়নের কার্যকারিতা বুঝতে নিউক্লিয়ার ফিউশন রিঅ্যাক্টগুলোর নকশার বেলায় এটি প্রাসঙ্গিক হবে। আরও ভালো ইভি ব্যাটারি ও এ ধরনের বিভিন্ন কাজে এর ব্যবহার হতে পারে।”
নেভেন বিবিসিকে আরও বলেছেন, উইলোর পারফরমেন্সের অর্থ হল এটি “এখন পর্যন্ত নির্মিত সেরা কোয়ান্টাম প্রসেসর।”
এদিকে, সারে ইউনিভার্সিটির একজন কম্পিউটিং বিশেষজ্ঞ প্রফেসর অ্যালান উডওয়ার্ড বলেছেন, কোয়ান্টাম কম্পিউটার বর্তমান ‘ক্লাসিক্যাল’ কম্পিউটারের তুলনায় অনেক দিক থেকে ভালো হলেও প্রচলিত কম্পিউটারের দিন শেষ এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
এ ছাড়া, কেবল একটি পরীক্ষার মাধ্যমে উইলোর পারফরমেন্স নিয়ে বাড়াবাড়ি করা বিষয়েও সতর্ক করেছেন তিনি।
“আপেল ও কমলার তুলনা না করার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।”
তবে তিনি এও বলেছেন, উইলো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির নির্দেশ দেয়, বিশেষ করে সমস্যা সমাধান করবে এমন কাজের বেলায়।