“টিস্যু ইমপ্ল্যান্ট বিষয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হবে। আর এটি কাজে আসবে প্রচলিত যকৃত ট্রান্সপ্ল্যান্টের বিকল্প খুঁজে বের করতে।”
Published : 19 Oct 2024, 04:49 PM
পৃথিবীর সীমানা ছাড়িয়ে এবার মহাকাশে মানব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে গবেষণার আশা করছেন গবেষকরা। মহাকাশের নির্দিষ্ট অঞ্চলে মানব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও টিস্যু নিয়ে খুঁটিনাটি গবেষণা করার জন্য উপযোগী পরিবেশও আছে বলে দাবি তাদের।
মহাকাশে গিয়ে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তৈরি করা ওঠানো গেলে বা বৃদ্ধি পেলে তা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে, যা পরিবর্তন আনবে মানবদেহে লিভার বা যকৃতে ইমপ্ল্যান্ট করার ক্ষেত্রে– সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
নতুন গবেষণায় ‘মানবদেহের বিভিন্ন লিভার টিস্যু কীভাবে নিজে নিজেই একসঙ্গে জুড়ে যায়’ তা খতিয়ে দেখতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস-এ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা। ফলে এতে করে যে পরিবর্তন আসবে তা চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডন্টে।
পৃথিবীতে মানবদেহের টিস্যু নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা গবেষণার ক্ষেত্রে নানা ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হয় বিজ্ঞানীদের। তারা বলছেন, পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথ অর্থাৎ ১২০০ মাইল উচ্চতার নীচে মহাকাশের যে অঞ্চলে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ভাসছে সেখানে রয়েছে এমন এক ধরনের মাইক্রোগ্র্যাভিটি, যার মাধ্যমে সমাধান মিলতে পারে এ সমস্যার।
নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, মহাকাশে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বৃদ্ধি করে তা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা সত্যিই সম্ভব। আর সেই ক্রমবর্ধমান প্রক্রিয়াটি চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন টিস্যুকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার নানা উপায় নিয়েও কাজ করছেন গবেষকরা।
“আমাদের গবেষণার বিভিন্ন ফলাফলে ইঙ্গিত মিলেছে, পৃথিবীর তুলনায় আরও ভাল পার্থক্য এবং কার্যকারিতা’সহ যকৃতের বিভিন্ন টিস্যুর বিকাশকে সক্ষম করতে পারে মহাকাশে থাকা এসব মাইক্রোগ্র্যাভিটির অবস্থা,” বলেছেন এ গবেষণার প্রধান ট্যামি টি চ্যাং।
“টিস্যু ইমপ্ল্যান্ট বিষয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ তৈরি করবে, যা কাজে আসবে প্রচলিত যকৃত ট্রান্সপ্ল্যান্টের বিকল্প খুঁজে বের করতে।”
মহাকাশে বেড়ে ওঠা এসব টিস্যুকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে এনে ব্যবহারের জন্য এদেরকে সংরক্ষণ করতে হবে। এজন্য ‘আইসোকোরিক সুপারকুলিং’ নামের এক কৌশল পরীক্ষা করছেন গবেষকরা, যা এসব টিস্যুর কোনও ক্ষতি না করেই এদেরকে হিমাঙ্কের নীচের তাপমাত্রায় রাখবে।
বিজ্ঞানীরদের অনুমান, এ কৌশল কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ করা যাবে বিভিন্ন ধরনের টিস্যুকে। পাশাপাশি মানবদেহের পুরো অঙ্গের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে এটি।
“শক্তিশালী সংরক্ষণ কৌশল তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য, যা কার্যকরী বিভিন্ন টিস্যুকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে আমাদের। ফলে তা ব্যবহার করা যাবে বিভিন্ন রোগের মডেলিং, ওষুধ পরীক্ষা ও মানবদেহের থেরাপিউটিক ইমপ্লান্টেশন’সহ বিভিন্ন জৈব চিকিৎসায়,” বলেছেন ড. চ্যাং।