এ গোটা প্রক্রিয়া সংগঠিত হয়েছে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭৩০ কিলোমিটার ওপরে, যার ব্যাপ্তি ছিল এক ঘণ্টা ৪৬ মিনিট।
Published : 14 Sep 2024, 01:37 PM
সম্প্রতি বিশ্বের প্রথম প্রাইভেট স্পেসওয়াক সম্পন্ন করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন দুই নভোচারী। এর মধ্যে একজন প্রকৌশলী ও একজন বিলিয়নেয়ার।
বৃহস্পতিবার নতুন স্পেসস্যুট পরে স্পেসএক্স-এর ক্যাপসুল থেকে বেরিয়ে এ ঝুঁকিপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেন তারা, যা এর আগে মার্ন যুক্তরাষ্ট্রে কেবল নাসার স্পেস প্রোগ্রামের নভোচারীদের জন্য ‘বিশেষভাবে বরাদ্দ’ ছিল।
‘পোলারিস ডন’ মিশনের এই দুই নভোচারী পর্যায়ক্রমে এককভাবে ক্যাপসুল থেকে বেরিয়েছেন, যেখানে গম্বুজ আকারের ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলটির বাইরে প্রায় ১০ মিনিট করে সময় কাটিয়েছেন তারা। ফলে, ইলন মাস্ক মালিকানাধীন কোম্পানিটি আবারও বাণিজ্যিক স্পেসফ্লাইটের পরিসর সফলভাবে বাড়াতে সক্ষম হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
SpaceX and the Polaris Dawn crew have completed the first commercial spacewalk!
“SpaceX, back at home we all have a lot of work to do, but from here, Earth sure looks like a perfect world.” — Mission Commander @rookisaacman during Dragon egress and seeing our planet from ~738 km pic.twitter.com/lRczSv5i4k
— Polaris (@PolarisProgram) September 12, 2024
“নিচে, এই বিশ্বের জন্য অনেক কাজই করা এখনও বাকি, কিন্তু এখান থেকে একেবারে নিখুঁত পৃথিবীই দেখাচ্ছে।” - নভোযান থেকে বেরিয়েই প্রথম এ কথাগুলো বলেন জ্যারেড আইজ্যাকসন। সে সময় এক পাশ থেকে আসা সূর্যের আলোয় অর্ধেকটা আলোকিত পৃথিবী দেখছিলেন তিনি।
ইলেকট্রনিক পেমেন্ট কোম্পানি ‘শিফট৪’-এর প্রতিষ্ঠাতার পর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে ক্যাপসুল থেকে বের হন স্পেসএক্স-এর প্রকৌশলী সারাহ জিলিস। অন্যদিকে, তাদের দুই সহযাত্রী স্কট পটিট ও অ্যানা মেনন সে দৃশ্যটি ক্যাপসুলের ভেতর থেকেই দেখেছেন।
এ গোটা প্রক্রিয়া ঘটেছে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭৩০ কিলোমিটার ওপরে, আর এর ব্যাপ্তি ছিল এক ঘণ্টা ৪৬ মিনিট। গেল মঙ্গলবার ফ্লোরিডা থেকে মিশনটি উৎক্ষেপণ হয়। এরপর থেকেই পৃথিবীর কক্ষপথ পরিক্রমণ করছেন এ চার নভোচারী।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রথম স্পেসওয়াকের ঘটনাটি ১৯৬৫ সালের, যখন ‘জেমিনাই’ ক্যাপসুলে বৃহস্পতিবারের মতো একই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছিল। সেবারও ক্যাপসুলকে একইভাবে চাপমুক্ত করে এর ঢাকনা খোলা হয়, যেখান থেকে একজন স্পেসস্যুট পরা নভোচারী বেরিয়ে মহাকাশে হেঁটেছিলেন।
ভবিষ্যতের জন্য ‘জায়ান্ট লিপ’
১৯৬৯ সালে প্রথমবারের মতো চন্দ্রপৃষ্ঠে নেমে নিল আর্মস্ট্রং প্রথম যে কথাটি বলেছিলেন, সেটি হচ্ছে, “আজকের দিনে মানুষের এই ছোট পদক্ষেপ আসলে মানবজাতির জন্য বিশাল এক লাফ।” ইংরেজিতে তিনি বলেন, “এ জায়ন্ট লিপ ফর ম্যানকাইন্ড”।
প্রায় এক দশক আগে স্পেসএক্স-এর ক্রু ড্রাগন বিকাশে আর্থিক সহায়তা দেওয়া মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা প্রধান বিল নেলসন বৃহস্পতিবারের এই মাইলফলকের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আর সে প্রশংসায় তিনি উপমা ধার করেছেন আর্মস্ট্রংয়ের কথা থেকেই।
আজকের এই সাফল্য বাণিজ্যিক স্পেস শিল্পের ভবিষ্যতের জন্য “এ জায়ান্ট লিপ”, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন বিল নেলসন।
“আর প্রাণবন্ত মার্কিন মহাকাশ অর্থনীতি গড়ে তোলার বিষয়ে নাসার দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রারও প্রতিনিধিত্ব করে এটি।”
মিশনে কত খরচ হচ্ছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশে রাজি হননি আইজ্যাকম্যান। তবে, ক্রু ড্রাগনের অন্যান্য ফ্লাইটে প্রতিটি সিটের দাম প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ডলার হওয়ায় এইসব মিশনের খরচ এর কয়েক গুন হতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।