“জৈবিক ত্বক দিয়ে ছোটখাটো ক্ষত সারানো সম্ভব। আর এক্ষেত্রে স্নায়ু ও ত্বক সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অঙ্গও যোগ করা যেতে পারে।”
Published : 03 Jul 2024, 06:16 PM
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা রোবটের শরীরে জ্যান্ত টিস্যু যোগ করার এমন এক উপায় খুঁজে পেয়েছেন, যার সহায়তায় রোবটরা হাসতে পারে এমনকি এদের চেহারাও ‘অনেক জীবন্ত’ দেখায়।
এই কৃত্রিম ত্বকের উদ্ভাবক টোকিও ইউনিভার্সিটি’র একদল গবেষক। তাদের দাবি, গবেষণাটি রোবটিক্স খাতে বেশ কিছু সুবিধা এনে দিতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে রোবটের গতিশীলতা বৃদ্ধি, প্লাস্টিক সার্জনদের প্রশিক্ষণে সহায়তা এমনকি কসমেটিক বা প্রসাধন শিল্পেও এর প্রয়োগ হতে পারে।
এর প্রোটোটাইপ দেখতে কিছুটা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মতো, যা বানাতে জ্যান্ত কোষ ব্যবহার করেন বিজ্ঞানীরা। এ কাজে তারা কঠিন পদার্থে ‘ভি-আকৃতির ছিদ্র’ তৈরি করেন যাতে ত্বকের কাঠামো দাঁড় করানো যায়।
এজন্য এর আগের কয়েকটি ‘বায়োহাইব্রিড’ প্রকল্প খতিয়ে দেখেছেন গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক শোজি তাকেউচি, যার মধ্যে রয়েছে পরীক্ষাগারে তৈরি করা মাংস থেকে শুরু করে জৈবিক পেশী টিস্যুওয়ালা বিভিন্ন এমন রোবট, যেগুলো হাঁটতে পারে।
“একদিকে ত্বকের প্রাকৃতিক নমনীয়তা, অপরদিকে এর টেকসই চরিত্র থাকার মানে দাঁড়ায়, রোবটের যান্ত্রিক কাঠামোর ওপর নির্ভর করে এ ধরনের ত্বকওয়ালা রোবট চলাফেরা করতে পারবে এবং এতে করে এর ত্বক ছিঁড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না।”
“এর বিকাশ প্রক্রিয়ার সময়, নরম ও ভেজা জৈবিক টিস্যুকে ত্বকে রূপান্তরের বিষয়টি কতটা কঠিন সেটি এ খাতের বাইরে থাকা লোকজন সম্ভবত কল্পনা করতেও পারবেন না। যেমন ধরা যাক, একে সবসময় জীবাণুমুক্ত রাখতে হয়। নয়তো এর ত্বকে ব্যাক্টেরিয়া প্রবেশের ঝুঁকি থাকে, যার ফলে টিস্যুও মরে যাবে।”
“তবে, জীবন্ত ত্বক রোবটের মধ্যে বিভিন্ন নতুন সক্ষমতা এনে দিতে পারে।”
“সেলফ হিলিং’ বা নিজেই নিজেকে নিরাময় করা খুবই বড় বিষয়। এক্ষেত্রে কিছু রসায়ণভিত্তিক উপকরণ ব্যবহার করা গেলেও সেগুলোর জন্য তাপ, চাপ বা অন্য কোনো সংকেত লাগে। এমনকি কোষের মতো এদের প্রসারণও ঘটে না।”
“জৈবিক ত্বক দিয়ে ছোটখাটো ক্ষত সারানো সম্ভব। আর এক্ষেত্রে স্নায়ু ও ত্বক সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অঙ্গও যোগ করা যেতে পারে।”
“আমরা এতে বিভিন্ন নতুন চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছি। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, ত্বকের পৃষ্ঠে চেহারার মতো ভাঁজ রাখার প্রয়োজনীয়তা ও আরও বাস্তবসম্মত মানুষের মতো চেহারা অর্জনের জন্য ঘন উপত্বক রাখা।”
“আমরা বিশ্বাস করি, এর চেয়েও ঘন ও বাস্তবভিত্তিক ত্বক বানানো সম্ভব। এজন্য ত্বকের মধ্যে ঘামগ্রন্থি, মেদগ্রন্থি, ছিদ্র, রক্তনালী, চর্বি ও স্নায়ু যোগ করতে হবে।”
এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘সেল রিপোর্টস ফিজিক্যাল সায়েন্স’-এ।