ফ্রিডের বাকি অভিযোগগুলো শুনানির জন্য বাহামা কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে, যা সময়সাপেক্ষ এবং এতে পিছিয়ে যাবে মামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ।
Published : 31 Dec 2023, 02:02 PM
ধসে যাওয়া ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ কোম্পানি এফটিএক্স-এর সাবেক প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ব্যাংকম্যান-ফ্রিডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বার মামলা করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন মার্কিন সরকারি আইনজীবীরা।
গত মাসে নিজেরই ক্রিপ্টো কোম্পানি থেকে গ্রাহকের অর্থ চুরির দায়ে সাজা হয় ফ্রিডের।
শুক্রবার ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা নথিতে আইনজীবীরা বলেন, দ্বিতীয় শুনানির তুলনায় ৩১ বছর বয়সী এ সাবেক বিলিয়নেয়ারের বিরুদ্ধে তাদের মামলা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানেই জনস্বার্থ বেশি’।
আইনজীবীরা আরও বলেন, ওই জনস্বার্থ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ, ফ্রিডের সাজার রায় হবে ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ, যেখানে সম্ভবত জালিয়াতির শিকার ব্যক্তিদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও থাকবে।
২ নভেম্বর জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্র চালানো মতো সাতটি অভিযোগে ফ্রিডকে দোষী সাব্যস্ত করেন মামলার জুরিরা, যেখানে এফটিএক্স গ্রাহকদের প্রলোভন দেখিয়ে আটশ কোটি ডলার হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তোলে বাদীপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মামলার আইনজীবীরা।
এদিকে, ফ্রিডের বিরুদ্ধে আরও ছয়টি অভিযোগ উঠেছিল, যেগুলো তার প্রথম বিচার থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। এর মধ্যে ছিল আর্থিক আইন লঙ্ঘনে প্রচারণা, ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা ও লাইসেন্সবিহীন আর্থিক লেনদেন চালানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ।
মামলার সাত অভিযোগের শুনানি চালানোর উদ্দেশ্যে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাহামা দ্বীপপুঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয় ফ্রিডকে।
আইনজীবীরা বলছেন, ফ্রিডের বাকি অভিযোগগুলো শুনানির জন্য বাহামা কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে, যা সময়সাপেক্ষ।
এফটিএক্স দেউলিয়া হওয়ার প্রায় এক বছর পর ব্যাংকম্যান-ফ্রিডের সাজা হল। আর এক সময় দুই হাজার ছয়শ কোটি ডলারের সম্পদ ছিল ‘ক্রিপ্টো কিং’ নামে পরিচিতি পাওয়া ফ্রিডের কাছে। মার্কিন আর্থিক বাজারের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিল এফটিএক্স। তবে, কোম্পানির আর্থিক ধসের পর সবই ভেস্তে যায়।
রয়টার্স বলছে, বেশ কয়েক দশকের কারাদণ্ড হতে পারে ফ্রিডের। ম্যানহাটনের আদালতে এ সাজার রায় দেবেন মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট বিচারক লুইস কাপলান।
আইনজীবীরা বলেন, দ্বিতীয় শুনানির বেশিরভাগ প্রমাণই প্রথম বিচারে দেখানো হয়ে গেছে।
তারা আরও বলেন, ফেডারেল নীতিমালার অধীনের ফ্রিডের এতো দীর্ঘমেয়াদি সাজার মুখে পড়ার সম্ভাবনা আছে যে, পরবর্তীতে আর দ্বিতীয় শুনানির প্রভাব পড়বে না। আর এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, মামলার বিচারক কাপলান ফ্রিডকে দোষী সাব্যস্ত করার নথিগুলো মাথায় রেখেই সাজার রায় দেবেন।
তবে, ফ্রিড এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার সময় ফ্রিড স্বীকার করেছিলেন যে, এফটিএক্স চালানোর সময় বেশ কয়েকটি ভুল করেছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে কোম্পানিতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক দল গঠন না করার বিষয়টিও। তবে, গ্রাহকদের অর্থ চুরির দায় বরাবরই নাকচ করে আসছেন ফ্রিড।
ফ্রিড আরও বলেন, তিনি ভেবেছিলেন যে, এফটিএক্স থেকে নিজের আরেক কোম্পানি আলামেডা রিসার্চে অর্থ সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অনুমোদনযোগ্য। আর কোম্পানি দুটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল, ধসের মুখে পড়ার আগ পর্যন্ত তিনি সেটি বুঝতে পারেননি।
এমআইটি থেকে স্নাতক ফ্রিড জেলে আছেন অগাস্ট থেকেই, যখন শুনানির গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন ফ্রিড এমন অভিযোগে বিচারক কাপলান তার জামিন বাতিল করেন।