এর মধ্যে আয়োজনের দর্শকরা সবচেয়ে বেশি সাড়া দিয়েছিলেন যখন ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ‘আমি প্রথম দিনই গ্যারি জেন্সলারকে ছাঁটাই করব’।
Published : 28 Jul 2024, 06:53 PM
ক্রিপ্টোমুদ্রা খাতের শীর্ষ এক আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় এলে প্রথম দিনই মার্কিন এক সংস্থার প্রধানকে ছাঁটাই করবেন।
সংস্থাটি হল যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)’।
শনিবারের ‘বিটকয়েন ২০২৪’ আয়োজনে মূল বক্তা ছিলেন ট্রাম্প, যেখানে টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ন্যাশভিল শহরে জমায়েত হয়েছিলেন এ খাতের সব হেভিওয়েটরা।
এ আয়োজনকে প্রযুক্তি খাতে নিজস্ব ভোটার ও আর্থিক অনুদানে আগ্রহ বাড়ানোর মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করেছেন রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্প।
বিবিসি বলছে, এর ফলে রিপাবলিকান দলের রাজনৈতিক রণক্ষেত্র হিসেবে উত্থান ঘটেছে ক্রিপ্টোমুদ্রা খাতের, যেখানে ট্রাম্পের দাবি, ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের অবস্থান ‘ক্রিপ্টোর বিপক্ষে’।
এর মধ্যে আয়োজনের দর্শকরা সবচেয়ে বেশি সাড়া দিয়েছিলেন যখন ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ‘আমি প্রথম দিনই গ্যারি জেন্সলারকে ছাঁটাই করব’, যিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মনোনীত এসইসি প্রধান। এ ঘোষণার সময় দর্শকরা তীব্র উল্লাসে মেতে ওঠেন ও ‘ট্রাম্প’-এর নামে শ্লোগান দিতে শুরু করেন।
ক্রিপ্টো খাতে ‘ক্র্যাকডাউন’-এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জেন্সলার। আর এর আগে তিনি দাবি করেছিলেন, এ খাত ‘জালিয়াত লোকজনে’ ভরপুর।
এক সময় ‘কিং অফ ক্রিপ্টো’ নামে পরিচিতি পাওয়া স্যাম ব্যাঙ্কম্যান-ফ্রিডের বিরুদ্ধেও মামলা করে এসইসি, যেখানে নিজের প্রতিষ্ঠিত ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ এফটিএক্স-এর গ্রাহকদের শত শত কোটি ডলার চুরি করার অভিযোগে তাকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মার্কিন আদালত।
প্রায় ৪৫ মিনিটের বক্তব্যে, নভেম্বরের নির্বাচনে জিতলে এ খাতের জন্য নিজের কিছু আইডিয়া প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রকে ক্রিপ্টোমুদ্রার বৈশ্বিক রাজধানীতে পরিণত করার কথাও বলেন তিনি। তবে এ খাতে তার সমর্থনের বিষয়টি ২০২১ সালে ফক্স নিউজকে দেওয়া মন্তব্যের পুরোপুরি উল্টো। সে সময় তিনি দাবি করেছিলেন, বিটকয়েন এক ধরনের ‘স্ক্যাম’, যা মার্কিন ডলারের মূল্যমানে প্রভাব ফেলছে।
আয়োজনে ট্রাম্প দর্শকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তিনি মার্কিন সরকারের কাছে থাকা বিটকয়েনের শতভাগই সমুন্নত রাখবেন। তিনি আরও যোগ করেন, এটি ‘বিটকয়েনের একটি জাতীয় স্তুপ’ হয়ে উঠবে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি একটি ‘বিটকয়েন ও ক্রিপ্টোবিষয়ক প্রেসিডেনশিয়াল পরামর্শক কাউন্সিল’ নিয়োগ দেবেন।
“এজন্য আপনার বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ লাগবে”, ক্রিপ্টোমুদ্রা মাইনিংয়ের পেছনে বিদ্যুৎ খরচের বিষয়টি নিয়ে বলেন তিনি। এমনকি তিনি বিভিন্ন এমন পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন, যেগুলোতে ‘জীবাশ্ম জ্বালানি’ ব্যবহার করা হবে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রচারণার পক্ষে সমর্থন বাড়িয়েছেন প্রযুক্তি খাতের কিছু কিছু শীর্ষ নেতা। এর মধ্যে রয়েছেন টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক, যিনি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিও। এ ছাড়া, ক্রিপ্টো টাইকুন উইংকেলভস জমজও শনিবার ট্রাম্পের দেওয়া বক্তব্যের সময় তাকে পেছন থেকে সমর্থন জানিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, ক্রিপ্টোখাতে নিয়ন্ত্রণ আনার বিষয়টিকে পক্ষপাতমূলক আচরণ হিসেবে দাঁড় করাতে নিজের বক্তব্যকে ব্যবহার করেছিলেন ট্রাম্প। এমনকি বাইডেন প্রশাসন ‘ক্রিপ্টো-বিরোধী’ এমন দাবিও করেন তিনি।
ট্রাম্প ছাড়াও এ আয়োজনে কথা বলেছেন স্বতন্ত্র প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আইনপ্রণেতা উইলি নিকেল ও রো খান্না।