সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে ফুটে উঠেছে, ব্লুস্কাই নিয়ে ডরসির সত্যিকারের অনুভূতি কী, যেখানে ব্লুস্কাইকে একেবারে ধুয়ে দিয়েছেন তিনি।
Published : 11 May 2024, 02:54 PM
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘বোমা ফাটিয়েছেন’ সদ্য ব্লুস্কাইয়ের পরিচালনা পর্ষদ থেকে সদ্য বেরিয়ে যাওয়া শীর্ষ নির্বাহী জ্যাক ডরসি।
স্যান ফ্রানসিসকোভিত্তিক ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ‘ফাউন্ডার ফান্ড’-এর বিপণন প্রধান মাইক সোলানাকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ফুটে উঠেছে, ব্লুস্কাই নিয়ে ডরসির সত্যিকারের অনুভূতি কী, যেখানে ব্লুস্কাইকে একেবারে ধুয়ে দিয়েছেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে ডরসি দাবি করেন, তিনি টুইটারে দায়িত্ব পালন করার সময় যেসব ভুল করেছেন, সেগুলোরই ‘পুনরাবৃত্তি করছে’ ব্লুস্কাই। এই দীর্ঘ কথোপকথনে ডরসি বেশ কিছু অভিযোগ জানালেও সেগুলোর পেছনে মূল কারণ ছিল দুটি:
তিনি কখনওই চাননি, ব্লুস্কাই এমন স্বাধীন কোম্পানি হোক, যার নিজস্ব পরিচালনা পর্ষদ, শেয়ার ও কর্পোরেট সত্ত্বা আছে (২০২২ সালে একটি জনকল্যাণমূলক কর্পোরেশন হিসেবে টুইটার থেকেই তৈরি হয় ব্লুস্কাই)। এর পরিবর্তে, তার পরিকল্পনা ছিল টুইটারকে ব্লুস্কাইয়ের তৈরি ওপেন সোর্স প্রোটকলের প্রথম ক্লায়েন্ট বানানো।
ব্লুস্কাইয়ের যে কনটেন্ট মডারেশন ব্যবস্থা আছে, তা মাঝে মধ্যে জাতিগত গালিওয়ালা ‘ইউজার নেইম’ ব্যবহার করা ব্যবহারকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিত।
“লোকজন ব্লুস্কাইকে টুইটারের বিকল্প হিসেবে দেখতে শুরু করেছিলেন,” বলেন ডরসি।
“যেহেতু এটা টুইটার না, তাই এটা ভালোই হওয়ার কথা। আর ব্যবহারকারীদের টুইটার থেকে বেরিয়ে নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে যোগ দিতেও দেখেছে ব্লুস্কাই। তারা খুবই সাধারণ ব্যবহারকারী ছিলেন।”
“তবে ধীরে ধীরে তারা জে গ্র্যাবার (ব্লুস্কাইয়ের সিইও) ও তার দলকে কনটেন্ট মডারেশন টুল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে এমনকি লোকজনকে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দেওয়ার মতো অনুরোধ জানাতে শুরু করেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তারা সে অনুযায়ী কাজ করেছেন।”
“তখনই আমার মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো এ চিন্তা এল যে, এমন হলে চলবে না। এটা আসলে টুইটারে আমার করা সকল ভুলের পুনরাবৃত্তি।”
অন্যদিকে, ডরসির এমন মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি ব্লুস্কাই। এক দীর্ঘ থ্রেড বার্তায় ব্লুস্কাইয়ের প্রোটোকল প্রকৌশলী পল ফ্রাজি বলেন, ‘অ্যাট প্রোটকল (ব্লুস্কাইয়ের কেন্দ্রীভূত সামাজিক নেটওয়ার্ক)’-এর প্রথম ক্লায়েন্ট হওয়ার কথা ছিল টুইটারের। তবে, মাস্ক কোম্পানি অধিগ্রহণের পর তিনি সেটি পুরোপুরি নাকচ করে দেন।
“মাস্ক অধিগ্রহণে দেরি করায় পুরো কোম্পানিই স্থবির হয়ে গিয়েছিল। এমনকি তার অধিগ্রহণের সময়ও চুক্তিটি খুব দ্রুত সম্পন্ন করা হয়েছিল,” বলেন ফ্রাজি।
“এমনটা কখনোই হওয়ার কথা ছিল না। মডারেশনবিহীন প্ল্যাটফর্ম রাখার বিষয়টিও বেশ বাজে একটি ধারণা। আমরা এমন একটি ‘শেয়ার্ড নেটওয়ার্ক’ বানিয়েছি, যেটি মডারেশন ব্যবস্থাওয়ালা প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার লক্ষ্যে তৈরি। এমনকি কেউ একটি মডারেশনবিহীন ‘অ্যাটপ্রোটো’ অ্যাপ বানাতে চাইলেও তাতে কিছু আসে যায় না। আমার ধারণা, তারা এটি বানাতে পারত। তবে, বিভিন্ন অ্যাপ স্টোর, নিয়ন্ত্রক ও ব্যবহারকারীদের কাছে এটি গ্রহণযোগ্য হতো কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।”
ডরসি মাস্ককে সরাসরি সমালোচনা না করলেও তিনি যখন বলেছিলেন, মাস্কই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি টুইটার অধিগ্রহণ করে ‘চেতনার আলো ছড়িয়ে দিতে পারেন’, তখন তার কথায় কিছুটা কম আগ্রহ দেখা গেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেট।
তিনি আরও যোগ করেন, টুইটারে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট সরিয়ে ফেলার বিষয়ে তিনি নিজেই সরকারি চাপের সঙ্গে লড়াই করলেও মাস্ক বেছে নিয়েছেন ‘উল্টো পথ’, সেখানে সাধারণত তিনি সরকারি নির্দেশনা মেনেই কাজ করেন।
“ইলন নিজের মতো করে লড়াই করবে। তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। তবে তিনি আপোষ করেও কাজ করতে পারেন, এমন ঝুঁকিও আছে,” বলেন ডরসি।